Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি বিধান

 

 

ইউনিয়ন পরিষদ আইন

 

 

 

 

ইউনিয়ন পরিষদ সংক্রান্ত বিদ্যমান অধ্যাদেশ রহিত করিয়া একটি নূতন আইন প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন

      যেহেতু, ইউনিয়ন পরিষদ সংক্রান্ত বিদ্যমান অধ্যাদেশ রহিত করিয়া একটি নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

      সেহেতু, এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-

 

 

প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক

 

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন ও প্রয়োগ

১। (১) এই আইন স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবেঃ

তবেশর্ত থাকে যে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন নির্দিষ্টএলাকাকে এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের সকল বা কোন বিধানেরপ্রয়োগ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।
(৩) ইহা অবিলম্বে কাযর্কর হইবে।

 

সংজ্ঞা

২। -বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) 'আইন প্রয়োগকারী সংস্থা' অর্থ পুলিশ বাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব), আনসার বাহিনী, ব্যাটালিয়ান আনসার, বাংলাদেশ রাইফেলস, কোস্ট গার্ড বাহিনী এবং প্রতিরৰা কর্মবিভাগসমূহ;

(২) 'আচরণ বিধিমালা' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত আচরণ বিধিমালা;
(৩) 'আর্থিক প্রতিষ্ঠান' অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নংআইন) এর ধারা ২ এবং অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ (২০০৩ সনের ৮ নং আইন) এর ধারা ২এ সংজ্ঞায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান;
(৪) 'ইমারত' অর্থে কোন দোকান, বাড়িঘর, কুঁড়েঘর, বৈঠকঘর, চালা, আস্তাবল বা যে কোন প্রয়োজনে যে কোনদ্রব্যাদি সহযোগে নির্মিত কোন ঘেরা, দেয়াল, পানি-সংরক্ষণাগার, বারান্দা, প্ল্যাটফর্ম, মেঝে ও সিঁড়িও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৫) 'ইউনিয়ন' অর্থ এই আইনের ধারা ১১ এর অধীন ইউনিয়ন হিসাবে ঘোষিত পলস্নী এলাকা এবং বিদ্যমান ইউনিয়নসমূহ;
(৬) 'ইউনিয়ন পরিষদ' অর্থ এই আইনের ধারা ১০ এর অধীন গঠিত একটি ইউনিয়ন পরিষদ;
(৭) 'উপজেলা' অর্থ উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ২৪ নং আইন) এর অধীনে উপজেলা হিসাবে ঘোষিত এলাকা এবং বিদ্যমান উপজেলাসমূহ;
(৮) 'উপজেলা পরিষদ' অর্থ উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ২৪ নং আইন) এর অধীনে গঠিত উপজেলা পরিষদ;
(৯) 'উপজেলা নির্বাহী অফিসার' অর্থ একটি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার;
(১০) 'ওয়ার্ড' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড;
(১১) 'কর' অর্থ কোন কর, উপ-কর, রেইট, টোল, ফি, শুল্ক অথবা এই আইনের অধীন আরোপযোগ্য কোন করও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১২) 'গ্রাম এলাকা' অর্থ শহর হিসাবে ঘোষিত নয় এইরূপ এলাকা;
(১৩) 'চেয়ারম্যান' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান;
(১৪) 'জনপথ' অর্থ সর্বসাধারনের ব্যবহার্য পথ, রাস্তা ও সড়ক;
(১৫) 'জনসংখ্যা' অর্থ সর্বশেষ আদমশুমারিতে উলিস্নখিত জনসংখ্যা;
(১৬) 'জমি' অর্থ নির্মাণাধীন বা নির্মিত অথবা জলমগ্ন যে কোন জমি;
১৭। 'জেলা' অর্থ District Act, 1836 (Act No. 1 of 1836) এর অধীন সৃষ্ট জেলা;
(১৮) 'ডেপুটি কমিশনার' অর্থে এই আইনের অধীন সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে নিয়োগকৃতকোন কর্মকর্তাকে বুঝাইবে যিনি ডেপুটি কমিশনারের সকল কিংবা যে কোন কার্যপালন করিবেন;
(১৯) 'তফসিল' অর্থ এই আইনের কোন তফসিল;
(২০) 'তহবিল' অর্থ ধারা ৫৩ এর অধীন গঠিত ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল;
(২১) 'থানা' অর্থ ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ (১৮৯৮ সনের ৫নং আইন) এর বিধান অনুযায়ী গঠিত পুলিশ স্টেশন;
(২২) 'দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা' অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার বাতৎকর্তৃক ক্ষমতা প্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক নিযুক্ত কোন কর্মকর্তা;

(২৩) 'নগর এলাকা' অর্থ নগর হিসাবে ঘোষিত এলাকা;

(২৪) 'নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ' অর্থ সরকার বা এই আইনের কোন সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যপূরণকল্পে সরকার কর্তৃক ক্ষমতা প্রদত্ত যে কোন সরকারি কর্মকর্তা;

(২৫) "নির্ধারিত পদ্ধতি' অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি।

(২৬) 'নির্বাচন কমিশন' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত নির্বাচন কমিশন;

(২৭) 'নির্বাচন পর্যবেক্ষক' অর্থ কোন ব্যক্তি বা সংস্থা, যাহাকে নির্বাচন কমিশনবা এতদুদ্দেশ্যে তদকর্তৃক অনুমোদিত কোন ব্যক্তি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোননির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য লিখিতভাবে অনুমতি দেওয়া হইয়াছে;

(২৮) 'নির্ভরশীল' অর্থ প্রার্থীর স্বামী বা স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, সৎছেলে-মেয়ে, পিতা, মাতা, ভাই বা বোন যিনি প্রার্থীর উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল;

(২৯) 'নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ' অর্থে দণ্ড বিধি, ১৮৬০ (Penal Code, 1860) এসংজ্ঞায়িত চাঁদাবাজি, চুরি, সম্পত্তি আত্নসাৎ, বিশ্বাস ভংগ, ধর্ষণ, হত্যা, খুন এবং Prevention of Corruption Act, 1947 (Act.II of 1947) এ সংজ্ঞায়িত Criminal Misconduct ও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৩০) 'পথ' অর্থেজনসাধারণের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হোক বা না হোক পায়ে চলার এমন পথ, মাঠ, বহিরাঙ্গন বা চলাচলের রাস্তা বা সড়কও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৩১) 'পরিষদ' অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ;

(৩২) 'প্রবিধান' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

(৩৩) 'বাজার' অর্থ এমন কোন স্থান যেখানে জনগণ মাছ, মাংস, ফল-মূল, শাক-সবব্জী বাঅন্য যে কোন খাদ্য দ্রব্য বিক্রয় ও ক্রয়ের জন্য সমবেত হয় অথবা পশু বাগরু-ছাগল ও পশু-পক্ষী ক্রয়-বিক্রয় হয় এবং এমন কোন স্থান যাহা বিধি মোতাবেকবাজার হিসাবে ঘোষণা করা হইয়াছে;

(৩৪) 'বাজেট' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের একটি আর্থিক বৎসরের আয় ও ব্যয়ের নির্ধারিত আর্থিক বিবরণ;

(৩৫) 'বার্ষিক মূল্য' অর্থ কোন গৃহ বা জমি প্রতি বছর ভাড়া দিয়া প্রাপ্ত অথবা প্রাপ্য মোট টাকা;

(৩৬) 'বিধি' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(৩৭) 'ব্যাংক' অথ

(ক) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ১৪ নং আইন) এর ধারা ৫(ণ) এ সংজ্ঞায়িত ব্যাংক কোম্পানী;


(খ) The Bangladesh Shilpa Rin Sangstha Order, 1972 (P.O.No. 128 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা;

(গ) The Bangladesh Shilpa Bank Order, (P.O. No. 129 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক;

(ঘ) The Bangladesh House Building Finance Corporation Order, 1973 (P.O. No.17 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্সকর্পোরেশন;

(ঙ) The Bangladesh Krishi Bank Order, 1973 (P.O. No. 27 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক;
(চ) The Investment Corporation of Bangladesh Ordinance, 1976 (Ordinance No. XL of 1976) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ইনভেষ্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ;
(ছ) The Rajshahi Krishi Unnayan Bank Ordinance, 1986 (Ordinance No.LVIII of 1986) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক; বা
(জ)কোম্পানী আইন ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Basic Bank Limited (Bangladesh Small Industries and Commerce Bank Limited);
(৩৮) 'মৌজা' অর্থ কোন নির্দিষ্ট এলাকা যাহা ভূমি জরিপের মাধ্যমে কোন জেলারভূমি সংক্রান্ত দলিলে মৌজা হিসাবে লিপিবদ্ধ ও সংজ্ঞায়িত;
(৩৯) 'রাস্তা' অর্থে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত নয় এমন রাস্তাও ইহার অনত্দর্ভুক্ত হইবে;
(৪০) 'লাভজনক পদ' (Office of profit) অর্থ প্রজাতন্ত্র কিংবা সরকারী সংবিধিবদ্ধকতৃর্পক্ষ কিংবা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি ও যে সকল কোম্পানীতে সরকারের ৫০%এর অধিক শেয়ারের মালিকানা আছে সে সকল কোম্পানীতে সাবর্ক্ষণিক বেতনভুক্তঅফিস, পদ বা অবস্থান;
(৪১) 'সংক্রামক ব্যাধি' অর্থে এমন ব্যাধি যাহাএকজন ব্যক্তি হইতে অন্য ব্যক্তিকে সংক্রামিত করে এবং সরকার কর্তৃক সরকারিগেজেটে প্রকাশিত অন্য যে কোন ব্যাধিও ইহার অনত্দর্ভুক্ত হইবে;
(৪২) 'সংবিধান' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান;
(৪৩) 'সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের১৫২(১) অনুচ্ছেদে সংজ্ঞায়িত কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ;
(৪৪) 'সদস্য' অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য;
(৪৫) 'সরকার' অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার;
(৪৬) 'সরকারি রাস্তা' অর্থ সরকার কিংবা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান অথবা অন্য কোনকর্তৃপক্ষ কর্তৃক রক্ষণাবেৰণাধীন জনসাধারণের চলাচলের জন্য সকল রাস্তা;
(৪৭) 'স্থানীয় কর্তৃপক্ষ' অর্থ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোন আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোন বিধিবদ্ধ সংস্থা;
(৪৮) 'স্থায়ী কমিটি' অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী কমিটি;
(৪৯) 'হাট' অর্থ পণ্যসামগ্রী, খাদ্য, মালামাল, পশুসমপদ, ইত্যাদি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন ও সময়ে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান।

 

 

 

 

দ্বিতীয় অধ্যায়
ওয়ার্ড

 

ওয়ার্ড গঠন

৩। (১) ইউনিয়ন পযার্য়ে সংরক্ষিত আসন ব্যতিরেকে সাধারণ সদস্য নিবার্চনের জন্য ইউনিয়নকে ৯টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করিতে হইবে।

(২) সংরক্ষিত আসনে সদস্য নিবার্চনের উদ্দেশ্যে একটি ইউনিয়নকে ৩ (তিন) টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করিতে হইবে।

 

ওয়ার্ড সভা

৪। (১) এই আইনের অধীন ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি ওয়ার্ড সভা গঠন করিতে হইবে।

(২) প্রত্যেক ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় অন্তভুর্ক্ত ব্যক্তিগণের সমন্বয়ে ঐ ওয়ার্ডের ওয়ার্ড সভা গঠিত হইবে।

 

 

 

 

ওয়ার্ড পর্যায়ে উম্মুক্ত সভা

৫। (১) প্রত্যেক ওয়ার্ড সভা উহার স্থানীয় সীমার মধ্যে বৎসরে কমপক্ষে ৩ (তিন) টি সভা অনুষ্ঠিত করিবে যাহার একটি হইবে বাৎসরিক সভা।

(২) ওয়ার্ড সভার কোরাম সবর্মোট ভোটার সংখ্যার বিশ ভাগের একভাগ দ্বারা গঠিত হইবে;

তবে মূলতবী সভার জন্য কোরাম আবশ্যক হইবে না, যাহা সাত দিন পর একই সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩)ইউনিয়ন পরিষদ ওয়ার্ড সভা অনুষ্ঠানের অন্যূন সাতদিন পুর্বে যথাযথভাবে সহজ ওগ্রহণযোগ্য উপায়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করিবে; মূলতবী সভার ক্ষেত্রেও অনুরুপগণবিজ্ঞপ্তি জারি করিতে হইবে।

(৪) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ার্ডসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্যসভাপতি হিসাবে উক্ত সভা পরিচালনা করিবেন।

(৫) সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের সদস্য ওয়ার্ড সভার উপদেষ্টা হইবেন।

(৬)ওয়ার্ড সভায় ওয়ার্ডের সাবির্ক উন্নয়ন কাযর্ক্রমসহ অন্যান্য বিষয়সমূহপযার্লোচনা করা হইবে; বার্ষিক সভায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য বিগত বৎসরেরবার্ষিক প্রতিবেদন এবং আর্থিক সংশ্লেষসহ ওয়ার্ডের চলমান সকল উন্নয়নকাযর্ক্রম সম্পর্কে অবহিত করিবেন এবং ওয়ার্ড সভার কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকরা সম্ভব না হইলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য এবং পরিষদের চেয়ারম্যান উহারযৌক্তিকতা ওয়ার্ড সভায় উপস্থাপন করিবেন।

 

 

ওয়ার্ড সভার ক্ষমতা, কার্যাবলী, ইত্যাদি

৬। (১) এই আইনের বিধান সাপেক্ষে এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতে ওয়ার্ড সভার নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা, কার্যাবলী ও অধিকার থাকিবে, যথা :-
(ক) ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্যাদি সংগ্রহ ও বিন্যস্তকরণে সহায়তা প্রদান;
(খ) ওয়ার্ড পযার্য়ে প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত এবং বাস্তবায়নযোগ্য স্কীম ও উন্নয়ন কর্মসূচির অগ্রাধিকার নিরূপণ;

(গ)নির্ধারিত নির্ণায়কের ভিত্তিতে বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির উপকারভোগীদেরচূড়ান্ত অগ্রাধিকার তালিকা প্রস্তুত ও ইউনিয়ন পরিষদের নিকট হস্তান্তর;
(ঘ) উন্নয়ন প্রকল্প কাযর্করভাবে বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান;
(ঙ) স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্থানীয় উন্নয়ন কাযর্ক্রম এবং সেবামূলক কাযর্ক্রম বাস্তবায়নে উৎসাহ প্রদান ও সহায়তাকরণ;
(চ)রাস্তার বাতি, নিরাপদ পানির উৎস ও অন্যান্য জনস্বাস্থ্য ইউনিট, সেচসুবিধাদি এবং অন্যান্য জনকল্যাণমূলক প্রকল্প স্থান বা এলাকা নির্ধারণেরজন্য পরিষদকে পরামর্শ প্রদান;
(ছ) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, পরিবেশসংরক্ষণ, বৃক্ষ রোপণ, পরিবেশ দূষণ রোধ, দুনীর্তিসহ অন্যান্য সামাজিকঅপকর্মের বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা;
(জ) ওয়ার্ডের বিভিন্ন শ্রেণী ওপেশার লোকের মধ্যে ঐক্য ও সুসম্পর্ক সৃষ্টি করা, সংগঠন গড়ে তোলা এবংবিভিন্ন প্রকার ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা;
(ঝ) ওয়ার্ডের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত উপকারভোগী শ্রেণী বা গোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ, তদারক ও সহায়তা প্রদান;
(ঞ) সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচিভুক্ত (যেমন, বয়স্কভাতা, ভর্তুকি, ইত্যাদি) ব্যক্তিদের তালিকা যাচাই ও মূল্যায়ন;
(ট) ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় বাস্তবায়নযোগ্য কাজের প্রাক্কলন সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যাদি সংরক্ষণ;
(ঠ) সম্পাদিতব্য কাজ ও সেবাসমূহের বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ;
(ড) পরিষদ কতৃর্ক ওয়ার্ড সংক্রান্ত বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের যৌক্তিকতাসমূহ অবহিত হওয়া;
(ঢ)ওয়ার্ড সভা কতৃর্ক গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পযার্লোচনাকরা এবং কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা;
(ণ)জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কাযর্ক্রম, বিশেষত: বিভিন্ন প্রকার রোগ প্রতিরোধ এবংপরিবার পরিকল্পনা কাযর্ক্রমে সক্রিয় সহযোগিতা করা; স্যানিটেশন কাযর্ক্রমেরসঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রেস্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সহায়তা প্রদান;

(ত) ওয়ার্ডের বিভিন্নএলাকায় নিরাপদ পানি সরবরাহ, রাস্তা আলোকিতকরণ ও অন্যান্য সেবা প্রদানেত্রুটি বিচ্যূতিসমূহ চিহ্নিত করা এবং উহা দূরীকরণের ব্যবস্থা করা;
(থ) ওয়ার্ডের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক-শিক্ষক সম্পর্ক উন্নয়ন;
(দ) যৌতুক, বাল্য বিবাহ, বহু বিবাহ ও এসিড নিক্ষেপের মত সামাজিক সমস্যা দূরীকরণে সামাজিক আন্দোলন গড়িয়া তোলা;
(ধ) জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কাযর্ক্রমে সহযোগিতা প্রদান করা;
(ন) আত্ম কর্মসংস্থানসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকান্ড উৎসাহিত করা;
(প) সরকার বা পরিষদ কর্তৃক অর্পিত অন্যান্য দায়িত্ব সম্পাদন।
(২)ওয়ার্ড সভা ইহার সাধারণ বা বিশেষ সভায় প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রতিবেদনপর্যালোচনা করিবে; তাছাড়া উপ-ধারা () এ উল্লিখিত উল্লেখযোগ্য কার্যাবলী, বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের বাজেট বিভাজন, কর্মপরিকল্পনা, খাত ভিত্তিক অর্থবরাদ্দ, প্রাক্কলন, সম্পাদিত ও সম্পাদিতব্য কাজের মালামাল ক্রয় বাবদ অর্থব্যয় ইত্যাদি বিষয়ে জনগণকে অবহিত করার লক্ষ্যে ওয়ার্ডের উন্মুক্ত দর্শনীয়স্থানে বোর্ডে লিখে টাঙ্গাইয়া দিবেন।
(৩) ওয়ার্ড সভায় অডিট রিপোর্টউপস্থাপন ও আলোচনা করিতে হইবে এবং এই বিষয়ে সভার মতামত ও সুপারিশ পরিষদেরবিবেচনার জন্য প্রেরণ করিতে হইবে।

(৪) ইউনিয়ন পরিষদের সচিবওয়ার্ড সভায় উপস্থিত থাকিয়া সভার কাযবিবরণী তৈরী ও গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহরেকর্ড করিবেন এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরবর্তী পরিষদ ও ওয়ার্ড সভায় উপস্থাপনকরিবেন।
(৫) ওয়ার্ড সভা কোন সাধারণ বা বিশেষ কাযার্দি সম্পন্ন করিবার উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক উপ-কমিটি গঠন করিতে পারিবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, উপ-কমিটির সদস্য সংখ্যা ১০ (দশ) জনের অধিক হইবে না এবং তন্মধ্যে অন্যূন ৩ (তিন) জন মহিলা হইবেন ।
(৬)সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে ওয়ার্ড সভার সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে যতদূরসম্ভব সাধারণ ঐক্যমতের এবং সভায় উপস্থিত মহিলাদের অংশগ্রহণের ভিত্তিতেসিদ্ধান্ত গ্রহণ করা বাঞ্চনীয় হইবে।
(৭) ওয়ার্ড সভা বিজ্ঞপ্তিআহবানের মাধ্যমে সম্ভাব্য উপকারভোগীদের নিকট হইতে প্রাপ্ত দরখাস্তসমূহতদন্ত করিয়া যাচাই বাছাইয়ের জন্য সভায় উপস্থাপন করিবে; সভায় যাচাই বাছাইয়েরপর নির্ধারিত নির্ণায়কের ভিত্তিতে উপকারভোগীদের চূড়ান্ত অগ্রাধিকার তালিকাপ্রস্তুত করা হইবে এবং উহা পরিষদের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করিতে হইবেঃ
তবেশর্ত থাকে যে, কোনরূপ অনিয়ম প্রমাণিত না হইলে পরিষদ ওয়ার্ড সভা কতৃর্কপ্রস্তুতকৃত ও প্রেরিত অগ্রাধিকার তালিকা পরিবর্তন করিতে পারিবে না।

 

ওয়ার্ড সভার দায়িত্ব

৭। (১) ওয়ার্ড সভা নিম্নলিখিত দায়িত্ব পালন করিবে,যথাঃ -
(ক) ওয়ার্ডের উন্নয়নমূলক ও জনকল্যাণমুখী কাযর্ক্রমের অগ্রগতি ও অন্যান্য তথ্যাদি সরবরাহ;
(খ)কৃষি, মৎস্য, হাঁস-মুরগি ও পশুপালন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, যোগাযোগ, যুব উন্নয়ন, ইত্যাদি বিষয়ক উন্নয়নকর্মকান্ডে অংশগ্রহণ;
(গ) জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ অত্যাবশ্যকীয় আর্থ-সামাজিক উপাত্ত সংগ্রহ;
(ঘ) বৃক্ষ রোপণ ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং পরিবেশ দূষণমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখা;
(ঙ)নারী ও শিশু নির্যাতন, নারী ও শিশু পাচার এবং যৌতুক, বাল্যবিবাহ ও এসিডনিক্ষেপ নিরোধ কাযর্ক্রম, দুনীর্তিসহ অন্যান্য সামাজিক অপকর্মের বিরূদ্ধেজনসচেতনতা সৃষ্টি করা;
(চ) ওয়ার্ডের আইন-শৃংখলা রক্ষাসহ সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখা;
(ছ) জনগণকে কর, ফি, রেইট, ইত্যাদিসহ বিভিন্ন প্রকার ঋণ পরিশোধের জন্য উদ্বুদ্ধ করা;
(জ) স্থানীয় সম্পদের সংগ্রহ ও উন্নয়নের মাধ্যমে পরিষদের সম্পদের উন্নয়নে সহায়তা করা;
(ঝ) স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে উন্নয়নমূলক ও অন্যান্য সমাজগঠনমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে এবং সংগঠন তৈরীতে সহায়তা;
(ঞ) মহামারী ও প্রাকৃতিক দুযোর্গ মোকাবেলায় জরুরী ভিত্তিতে করণীয় নির্ধারণ।
(২) ওয়ার্ড সভার কাযাবর্লী ও দায়িত্ব সম্পর্কে পরিষদকে রিপোর্ট প্রদান।


(৩)ধারা ৬ ও উপ-ধারা () এ বর্ণিত ক্ষমতা ও দায়িত্ব ছাড়াও ওয়ার্ড সভা ক্ষেত্রবিশেষে বিশেষ সভা আহবানের জন্য পরিষদকে অনুরোধ করিতে পারিবে।

 

 

তৃতীয় অধ্যায়
পরিষদ

 

ইউনিয়নকে প্রশাসনিক একাংশ ঘোষণা

৮।এই আইনের অধীন ঘোষিত প্রত্যেকটি ইউনিয়নকে, সংবিধানের ১৫২() অনুচ্ছেদেরসহিত পঠিতব্য ৫৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এতদ্বারা প্রজাতন্ত্রেরপ্রশাসনিক একাংশ বলিয়া ঘোষণা করা হইল।

 

পরিষদ সৃষ্টি

৯।(১)এই আইন বলবৎহওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যমান সকল ইউনিয়ন পরিষদ এই আইনের বিধানঅনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ হিসাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(২)পরিষদ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটিসাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইন ও বিধি সাপেৰে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবরউভয় প্রকার সমপত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবারক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে অথবা ইহারবিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইবে।
(৩) পরিষদ এই আইন দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতা, কার্যাবলী এবং দায়িত্ব পালন করিবে।

 

পরিষদ গঠন

১০। (১) ইউনিয়ন পরিষদ ১ (এক) জন চেয়ারম্যান ও ১২ (বার) জন সদস্য লইয়া গঠিতহইবে যাহাদের ৯ (নয়) জন সাধারণ আসনের সদস্য ও ৩ (তিন) জন সংরৰিত আসনেরসদস্য হইবেন।

(২) উপ-ধারা () এর বিধান সাপেৰে, চেয়ারম্যান ও সাধারণ আসনের সদস্যগণ এই আইন ও বিধি অনুসারে প্রত্যৰ ভোটে নির্বাচিত হইবেন।

(৩)প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য ৩(তিন)টি আসন সংরৰিতথাকিবে, যাহা সংরৰিত আসন বলিয়া অভিহিত হইবে এবং উক্ত সংরৰিত আসনের সদস্যগণওএই আইন ও বিধি অনুসারে প্রত্যৰ ভোটে নির্বাচিত হইবেন :

তবে শর্তথাকে যে, উপ-ধারা () এর বিধান অনুসারে ৯(নয়)টি সাধারণ আসনের সদস্যনির্বাচনে মহিলা প্রাথর্ীদের সরাসরি অংশগ্রহণকে বারিত করিবে না।

(৪) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উক্ত পরিষদের একজন সদস্য বলিয়া গণ্য হইবেন।

(৫) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কতর্ৃক নির্ধারিত সম্মানী পাইবেন।

(৬) এই আইনের অধীনে গঠিত প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নাম সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হইবে।

(৭) সরকার ইউনিয়নে কর্মরত সকল সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপর পরিষদের নিয়ন্ত্রণ ৰমতা প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারণ করিবে।

 

ইউনিয়ন গঠন

১১। (১) ডেপুটি কমিশনার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত পদ্ধতিতেকতকগুলি গ্রাম বা সংলগ্ন মৌজা বা গ্রামের সমন্বয়ে একটি ওয়ার্ড এবং ৯ (নয়)টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে একটি ইউনিয়ন ঘোষণা করিবেন।

(২) উপ-ধারা () এর অধীন ঘোষিত ইউনিয়ন ডেপুটি কমিশনার কতৃর্ক নির্ধারিত নামে অভিহিত হইবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, ইউনিয়নের নামকরণ কোন ব্যক্তির নামে হইবে না।

(৩)উপ-ধারা () অনুযায়ী জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে ইউনিয়নের ওয়ার্ডসমূহের ক্রমিকনম্বর এবং উক্ত ওয়ার্ডের স্থানীয় সীমানা নির্দিষ্ট করিতে হইবে।
(৪) সরকার প্রত্যেক ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের লোক সংখ্যা নির্ধারণ করিবে।

(৫) ডেপুটি কমিশনার যেইরূপ অনুসন্ধান করা উপযুক্ত মনে করিবেন, সেইরূপ অনুসন্ধান করিয়া পরিষদ গঠন করিবার পর, প্রজ্ঞাপন দ্বারা-

(ক) কোন ওয়ার্ড হইতে যে কোন মৌজা বা গ্রাম বা উহার অংশ বিশেষ বাদ দিতে পারিবেন;
(খ) কোন ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডকে একাধিক ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডে বিভক্ত করিতে পারিবেন; অথবা
(গ) কোন ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড এবং উহার সংলগ্ন এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করিয়া একটি ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড পুনর্গঠন করিতে পারিবেন :

তবেশর্ত থাকে যে, উপ-ধারা() অনুসারে কোন ইউনিয়ন পরিষদ উহার এলাকাভুক্ত এবংবাতিলকৃত কোন ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্ব না থাকিবার কারণে উক্ত পরিষদ গঠনেরবৈধতা ৰুণ্ন হইবে না।

 

সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা নিয়োগ

১২। (১) উপজেলা নিবার্হী অফিসার ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণের উদ্দেশ্যেপ্রজাতন্ত্রের চাকুরিতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মধ্য হইতে বিধি মোতাবেকপ্রয়োজনীয় সংখ্যক সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা ও সহকারী সীমানা নির্ধারণকর্মকর্তা নিয়োগ করিতে পারিবেন।

(২) সহকারী সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তার অধীনে কায সম্পাদন করিবেন ।

 

ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ

১৩। (১) ওয়ার্ডসমূহের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এলাকার ভৌগলিক অখণ্ডতা এবংজনসংখ্যার বিন্যাস ও প্রশাসনিক সুবিধাদির প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হইবে[ ***]।
(২)সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা ওয়ার্ডসমূহের সীমানা নির্ধারণের উদ্দেশ্যেযেরূপ প্রয়োজন মনে করিবেন সেইরূপ রেকর্ডপত্র পরীক্ষা, তদন্ত এবংএতদ্সংক্রান্ত বিষয়ে উপস্থাপিত প্রস্তাবসমূহ বিবেচনা করিতে পারিবেন এবংপ্রস্তাবিত কোন্ এলাকা কোন্ ওয়ার্ডের অন্তভুর্ক্ত হইবে উহা উল্লেখ করিয়াওয়ার্ডসমূহের একটি প্রাথমিক তালিকা তাহার দফতর, বিভিন্ন স্তরভুক্ত পরিষদকাযার্লয় ও তিনি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন সেইরূপ অন্যান্য উম্মুক্তস্থানে প্রকাশ করিবেন।

(৩) উপ-ধারা () এর অধীন প্রাথমিক তালিকাপ্রকাশের ১৫ (পনের) কায দিবসের মধ্যে তৎসম্পর্কে আপত্তি ও পরামর্শ দাখিলকরিবার আহবান সম্বলিত নোটিশ তাহার দফতর, বিভিন্ন স্তরভুক্ত পরিষদ কাযার্লয় ওতিনি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করিবেন সেইরূপ অন্যান্য উম্মুক্ত স্থানেপ্রকাশ করিবেন।
(৪) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা উপ-ধারা () এর অধীনপ্রাপ্ত আপত্তি বা পরামর্শ উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবেন; উপজেলা নিবার্হী অফিসার উক্তরূপ আপত্তি বা পরামর্শ প্রাপ্তির তারিখ হইতেঅনধিক ১৫ (পনের) কায দিবসের মধ্যে যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেইরূপ তদন্তেরপর তাহার সিদ্ধান্ত সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তাকে জানাইবেন।
(৫)উপ-ধারা () অনুযায়ী উপজেলা নিবার্হী অফিসার কতৃর্ক প্রদত্ত সিদ্ধান্তঅনুসারে সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা উপ-ধারা () এর অধীন প্রকাশিত প্রাথমিকতালিকা সংশোধন, পরিবর্তন বা রদবদল করিবেন।
(৬) সীমানানির্ধারণ কর্মকর্তা উপ-ধারা () অনুযায়ী সংশোধন, পরিবর্তন বা রদবদল করিবারপর, তাহার দফতরে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কাযার্লয়ে এবং তাহারবিবেচনানুসারে অন্য কোন স্থানে ওয়ার্ডসমূহের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করিবেনযাহাতে প্রতি ওয়ার্ডে অন্তভুর্ক্ত এলাকাসমূহ নির্দেশ করিতে হইবে।

(৭)উপ-ধারা () এর অধীন প্রকাশিত তালিকার বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বাব্যক্তিবর্গ লিখিতভাবে ১০ (দশ) কায দিবসের মধ্যে ডেপুটি কমিশনারের নিকটআপিল দায়ের করিতে পারিবেন; ডেপুটি কমিশনার আপিলকারী ব্যক্তি বাব্যক্তিবর্গকে শুনানির সুযোগ দিয়া উপজেলা নিবার্হী অফিসারের সিদ্ধান্ত এবংসংশ্লিষ্ট নথিপত্র ও তথ্যাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়া আপিল দায়েরের ৩০ (ত্রিশ) কায দিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন এবং আপিল কতৃর্পক্ষহিসেবে ডেপুটি কমিশনারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

(৮)উপ-ধারা () এর অধীন আপিল কতৃর্পক্ষের সিদ্ধান্তের পর সীমানা নির্ধারণকর্মকর্তা ওয়ার্ডের সীমানার প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন বা রদবদল করিয়াঅথবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপীল দায়ের করা না হইয়া থাকিলে সীমানা নির্ধারণকর্মকর্তা প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তভুর্ক্ত এলাকাসমূহ উল্লেখ করিয়াওয়ার্ডসমূহের চূড়ান্ত তালিকা তাঁহার দফতরে, পরিষদের কাযার্লয় ও তাঁহারবিবেচনানুসারে অন্য কোন প্রকাশ্য স্থান বা স্থানসমূহে প্রকাশ করিবেন এবংতিনি উক্ত তালিকার সত্যায়িত কপি উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট প্রেরণকরিবেন এবং তিনি উহা সরকারি গেজেটে প্রকাশের ব্যবস্থা করিবেন।

(৯)সংরক্ষিত আসনের সদস্য নিবার্চনের উদ্দেশ্যে, সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা এইধারার অধীন কোন ইউনিয়নকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ওয়ার্ডে বিভক্তিকরণের সাথে সাথে, এই ধারার বিধানাবলী যথাসম্ভব অনুসরণ করিয়া, উক্ত ওয়ার্ডসমুহকে এইরূপসমন্বিত ওয়ার্ডরূপে চিহ্নিত করিবেন যেন এইরূপ সমন্বিত ওয়ার্ডের সংখ্যাসংরক্ষিত আসন সংখ্যার সমান হয়।

 

পরিষদের এলাকা রদবদলের ফল

১৪। (১) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন পরিষদ হইতে কোন একটি এলাকা সরকারিপ্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হইলে উক্ত প্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে উহা উক্তপরিষদের প্রশাসনিক অধিক্ষেত্র এবং সরকার যদি অন্যরূপ নির্দেশ না দিয়া থাকেতাহা হইলে, উক্ত পরিষদে বলবৎনিয়ম, আদেশ, নির্দেশ ও প্রজ্ঞাপনের অধীনথাকিবে না।

(২) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন একটি এলাকা সরকারিপ্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অন্য কোন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত করা হইলে উক্তপ্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে উহা উক্ত পরিষদের প্রশাসনিক অধিক্ষেত্র এবং সরকারযদি অন্যরূপ নির্দেশ না দিয়া থাকে তাহা হইলে, উক্ত পরিষদে বলবৎনিয়ম, আদেশ, নির্দেশ ও প্রজ্ঞাপনের অধীন থাকিবে।

(৩) এই আইনেরবিধান অনুযায়ী কোনএকটি পরিষদের এলাকাকে দুই বা ততোধিক পরিষদে বিভক্ত করা হইলে উক্তএলাকাসমূহকে পৃথক পৃথক পরিষদ হিসাবে পুনর্গঠিত করিতে হইবে এবং অনুরূপভাবেবিভক্ত পরিষদ নবগঠিত পরিষদের অন্তভুর্ক্ত হওয়ার তারিখ হইতে আর বিদ্যমানথাকিবে না।

(৪) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন এলাকাকে কোন পরিষদেরসঙ্গে একীভূত করা হইলে অথবা দুই বা ততোধিক পরিষদকে একটি মাত্র পরিষদ গঠনেরজন্য একীভূত করা হইলে উক্তরূপ পুনর্গঠন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ পরিষদ বাপরিষদসমূহের সম্পত্তি, তহবিল, দায়দায়িত্ব, ইত্যাদি নির্ধারিত কতৃর্পক্ষকতৃর্ক লিখিত আদেশ দ্বারা যেরূপ নির্ধারিত হইবে, সেইরূপ বিভাজন অনুসারে, নির্ধারিত পরিষদ বা পরিষদসমূহে বর্তাইবে এবং উক্তরূপ নির্ধারণ চূড়ান্তহইবে।

(৫) উপ-ধারা () অনুযায়ী প্রদত্ত কোন আদেশে উক্তরূপ পুনর্গঠনকাযর্কর করিবার জন্য যেরূপ আবশ্যক হইবে সেইরূপ পরিপূরক, আনুষঙ্গিক ওপারিণামিক (Consequential) বিধানাবলী থাকিতে পারিবে; তবে উপ-ধারা ()অনুযায়ী বিভক্তিকরণের পর বা উপ-ধারা () অনুযায়ী একীভূতকরণের পর, পরিষদপুনর্গঠনের প্রয়োজনে-

(ক) পূবর্তন পরিষদের সদস্যগণের পদের মেয়াদউত্তীর্ণ না হওয়া পযর্ন্ত নবগঠিত পরিষদ বা পরিষদসমূহে সাধারণ নিবার্চনঅনুষ্ঠিত করা যাইবে না;

(খ) যে সকল সদস্যের পদের মেয়াদ অনুত্তীর্ণথাকিবে সে সকল সদস্য সরকার বা তৎকতৃর্ক ক্ষমতা প্রাপ্ত কতৃর্পক্ষেরআদেশক্রমে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা সেই সকল নিবার্চনী এলাকা নিয়াগঠিত (সম্পূর্ণ বা আংশিক) পরিষদের সদস্য হিসাবে ঘোষিত হইবেন; যে সকলনিবার্চনী এলাকা হইতে উক্ত সদস্যগণ পূবের পরিষদসমূহে নিবার্চিত হইয়াছিলেনএবং এইরূপ যে কোন সদস্য তাঁহার পদের মেয়াদের অনুত্তীর্ণ অংশের জন্য নবগঠিতপরিষদের পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।

 

কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা অংশ বিশেষ পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন ইত্যাদিতে অন্তভুর্ক্তির ফল

১৫। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা ইহার অংশবিশেষ পৌরসভায় বা সিটি কর্পোরেশনে রূপান্তরিত বা কোন বিদ্যমান পৌরসভায়বা সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে :

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত ইউনিয়ন বা ইহার অংশবিশেষকে পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশন সংক্রান্তপ্রচলিত আইনে বর্ণিত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে:

আরো শর্ত থাকে যে, পৌর এলাকা বা সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হইবার পরউক্ত এলাকার সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিঅনূধব ১ (এক) মাসের মধ্যে উক্তরূপ ঘোষণার বিরুদ্ধে সরকারের নিকট লিখিতআপত্তি উত্থাপন করিতে পারিবে; উত্থাপিত আপত্তি সম্পর্কে সরকার পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) কার্য দিবসের মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৌর এলাকা বা সিটিকর্পোরেশন গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।

(২) যদি কোনসময়ে, কোন ইউনিয়ন পরিষদের সমগ্র এলাকা উক্ত সময়ে বলবৎকোন বিধি অনুযায়ী কোনপ্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা কোন ক্যান্টনমেন্টবোর্ডের প্রশাসনিক এলাকাভুক্ত করা হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ, উক্ত প্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে বা প্রজ্ঞাপনে যেরূপনির্দিষ্ট হইবে সেইরূপ তারিখ, বা যে তারিখে নবগঠিত সংস্থাটির নিবার্চনসমূহসম্পন্ন হয় সেই তারিখ, ইহাদের মধ্যে যাহা আগে হইবে, উক্ত তারিখ হইতে আরবিদ্যমান থাকিবে না এবং যে সকল সম্পত্তি, তহবিল ও অন্য পরিসম্পদ উক্তপরিষদে বর্তাইয়াছিল তৎসমূহ এবং উক্ত পরিষদের সকল অধিকার ও দায়দায়িত্বক্ষেত্রানুযায়ী সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্টবোর্ডের নিকট সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের আদেশানুযায়ী বর্তাইবে ও হস্তান্তরিতহইবে এবং উক্ত পরিষদের অধীনে নিযু্ক্ত ব্যক্তিগণ তাহাদের অভিপ্রায়েরভিত্তিতে ও নিয়োগের শর্তানুযায়ী যোগ্য বিবেচিত হইলে যে তারিখে উক্ত পরিষদআর বিদ্যমান থাকিবে না সেই তারিখ হইতে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা বা সিটিকর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে নিয়োজিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(৩)যদি কোন সময়ে, কোন পরিষদের অংশ বিশেষ উক্ত সময়ে বলবৎকোন বিধি অনুযায়ী কোনপ্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা কোন ক্যান্টনমেন্টবোর্ডের প্রশাসনিক এলাকাভুক্ত করা হয়, তাহা হইলে উক্ত পরিষদের অংশ, উক্তপ্রজ্ঞাপনের তারিখ হইতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে বা প্রজ্ঞাপনে যেরূপ নির্দিষ্টহইবে সেইরূপ তারিখ, বা যে তারিখে নবগঠিত সংস্থাটির নিবার্চনসমূহ সম্পন্ন হয়সেই তারিখ, ইহাদের মধ্যে যাহা আগে হইবে, উক্ত তারিখ হইতে হ্রাসপ্রাপ্তহইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; অনুরূপভাবে অন্তভুর্ক্তকৃত পরিষদের অংশ বিশেষেরসকল সম্পত্তি, তহবিল ও অন্য পরিসম্পদ এবং উক্ত পরিষদের সকল অধিকার ওদায়দায়িত্ব ক্ষেত্রানুযায়ী সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বাক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নিকট সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের আদেশানুযায়ী বর্তাইবে ওহস্তান্তরিত হইবে এবং সরকার অন্যরূপ নির্দেশ না দিলে, ক্ষেত্রানুযায়ী, উক্তপৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অধিক্ষেত্রাধীন (Jurisdiction) এলাকার জন্য বলবৎসকল নিয়ম, আদেশ, নির্দেশ ও প্রজ্ঞাপন উক্তপরিষদ এলাকার যে অংশ উক্তরূপে অন্তভুর্ক্ত হয় সেই অংশের ক্ষেত্রেওপ্রযোজ্য হইবে।

 

পৌরসভা, ইত্যাদির সমগ্র বা আংশিক এলাকা নিয়া ইউনিয়ন পরিষদ গঠন

১৬।পৌরসভা, ইত্যাদির সমগ্র বা আংশিক এলাকা নিয়া ইউনিয়ন পরিষদ গঠন।- (১) যদিসরকার মনে করে যে, কোন পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডেরসমগ্র এলাকা বা উহার কোন অংশ বিশেষের রূপরেখা পরিবর্তিত হইয়া গিয়াছে এবংউহার অধীনে এক বা একাধিক ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করা প্রয়োজন, তাহা হইলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত প্রজ্ঞাপনের প্রাক-প্রকাশনার পর-

(ক) উক্তরূপ এলাকাকে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট করিয়া কোন বিদ্যমান ইউনিয়ন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত করিতে পারিবে; বা
(খ) উক্তরূপ এলাকায় এক বা একাধিক ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করিতে পারিবেঃ

তবেশর্ত থাকে যে, উক্ত প্রাক-প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনটি গণ-বিজ্ঞপ্তি আকারে অন্ততঃদুইটি বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকায় (স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত একটিপত্রিকাসহ) এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার গুরুত্বপূর্ণ অফিস ওস্থানসমূহে প্রকাশ করিতে হইবে, যাহাতে উক্ত প্রকাশনার তারিখ হইতে দুই মাসেরমধ্যে আপত্তি উত্থাপনের আহবান জানানো হইবে এবং সরকার কতৃর্ক নিযুক্ত কোনকতৃর্পক্ষ আপত্তি উত্থাপনকারী বা উত্থাপনকারীদের শুনানির সুযোগ দিয়াপ্রাপ্ত আপত্তি বিবেচনা করিয়া সিদ্ধান্ত প্রদান করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশনার তারিখ হইতে ১৮০ (একশত আশি) দিনেরমধ্যে প্রজ্ঞাপনে নির্দিষ্ট এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের নিবার্চন অনুষ্ঠিত করিতেহইবে এবং উক্তরূপ নিবার্চন সমাপ্তির তারিখ হইতে, উক্তরূপ এলাকা, ক্ষেত্রানুযায়ী, উক্তরূপে নির্দিষ্ট বা গঠিত ইউনিয়ন পরিষদের অন্তভুর্ক্তবলিয়া গণ্য হইবে, এবং উক্তরূপে প্রজ্ঞাপিত এলাকার পৌরসভা বা সিটিকর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর অংশ হিসেবে আর বিদ্যমান থাকিবে না।

(৩) উপ-ধারা () এ উল্লিখিত এলাকা যে তারিখ হইতে ইউনিয়ন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত করা হয় সেই তারিখ হইতে -

(ক)সংশ্লিষ্ট পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের যে এলাকাউক্তরূপে অন্তভুর্ক্ত হয় সেই এলাকা সম্পর্কিত সম্পত্তি, তহবিল ও দায়দায়িত্বসংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষ কতৃর্ক যেরূপ নির্ধারিত হইবে সেইরূপ বিভাজন অনুসারেইউনিয়ন পরিষদে বর্তাইবে ও উহার নিকট হস্তান্তরিত হইবে; এবং

(খ)উক্তরূপে অন্তভুর্ক্ত এলাকা সম্পর্কিত ব্যক্তিগণের মধ্যে যাহারা পৌরসভা বাসিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কতৃর্ক নিয়োজিত, তাহারা সংশ্লিষ্টইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত থাকিবার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিলে নির্ধারিত বিধিঅনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদে নিয়োজিত বলিয়া গণ্য হইবে।

 

নদী ভাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুযোর্গ, ইত্যাদি কারণে পরিষদ পুনর্গঠন

১৭।কোন পরিষদের অন্তভুর্ক্ত সম্পূর্ণ এলাকা বা আংশিক অংশ নদী ভাঙ্গন অথবাঅন্য কোন প্রাকৃতিক দুযোর্গের কারণে বিলীন বা বিলুপ্ত হইয়া গেলে সরকার, উক্ত পরিষদ বিধি অনুযায়ী বাতিল বা পুনর্গঠন করিবে এবং পুনর্গঠনের ক্ষেত্রেনতুন পরিষদ গঠন না হওয়া পযর্ন্ত বিদ্যমান পরিষদ এই আইনের বিধান অনুযায়ী সকলকাযর্ক্রম পরিচালনা করিবে।

 

প্রশাসক নিয়োগ

১৮। (১) কোন এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার পর ইহার কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকারএকজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করিবে এবং এই আইনের বিধানমোতাবেক নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদেরযাবতীয় দায়িত্ব পালন করিবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা () এর অধীন নিযুক্ত প্রশাসক ১২০ (একশত বিশ) দিনের অধিক সময় কাল দায়িত্বে থাকিতে পারিবেন না :
আরোশর্ত থাকে যে, কোন দৈব-দূর্বিপাকের কারণে এই আইনের বিধান মোতাবেকনির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হইলে সরকার উক্ত মেয়াদ অনধিক ৬০ (ষাঁট)দিন বৃদ্ধি করিতে পারিবে।
(২) সরকার প্রশাসককে কর্মসম্পাদনে সহায়তা করিবার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে কমিটি গঠন করিতে পারিবে।
(৩) প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যবৃন্দ, যথাক্রমে, চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন।

 

 

চতুর্থ অধ্যায়
চেয়ারম্যান ও সদস্য নিবার্চন

 

ভোটার তালিকা ও ভোটাধিকার

১৯। (১) প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত একটি ভোটার তালিকা থাকিবে।

(২) কোন ব্যক্তি কোন ওয়ার্ডের ভোটার তালিকাভুক্ত হইবার অধিকারী হইবেন, যদি তিনি-

(ক) বাংলাদেশের একজন নাগরিক হন;
(খ) আঠারো বৎসরের কম বয়স্ক নহেন;
(গ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত নহেন;
(ঘ) সংশিষ্ট ওয়ার্ডের অধিবাসী বা অধিবাসী বলিয়া গণ্য হন।
(৩)কোন ব্যক্তি ভোটার তালিকায় যে ওয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত হইবেন, তিনি সেইওয়ার্ডের সদস্য এবং চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভোট প্রদান করিতে পারিবেন।

 

নির্বাচন পরিচালনা,

ইত্যাদি

২০। (১) নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত বিধি অনুসারে নির্বাচন কমিশন পরিষদেরচেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্বাচনের আয়োজন, পরিচালনা ও সমপাদন করিবে এবংঅনুরূপ বিধিতে নির্বাচন কমিশন নিম্নরূপ সকল বা যে কোন বিষয়ের বিধান করিতেপারিবে, যথা :-

(ক) নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ এবংতাহাদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব;
(খ) প্রার্থীদের মনোনয়ন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে আপত্তি এবং মনোনয়নপত্র বাছাই;
(গ) প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত জামানত গ্রহণ এবং উক্ত জামানত ফেরত প্রদান বা বাজেয়াপ্তকরণ;
(ঘ) প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ;
(ঙ) প্রার্থীদের এজেন্ট নিয়োগ;
(চ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে নির্বাচন পদ্ধতি;
(ছ) ভোট গ্রহণের তারিখ, সময়, স্থান এবং নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়;
(জ) ভোটদান পদ্ধতি;
(ঝ) প্রাপ্ত ভোট বাছাই ও গণনা, ফলাফল ঘোষণা এবং সমান সংখ্যক ভোট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনুসরণীয় পদ্ধতি;
(ঞ) ব্যালট পেপার ও নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্রের হেফাজত ও বিলি বন্টন;
(ট) যে অবস্থায় ভোট গ্রহণ স্থগিত করা যায় এবং পুনরায় ভোট গ্রহণ করা যায়;
(ঠ) প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয় এবং এতদসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়;
(ড)নির্বাচনে দুর্নীতিমূলক বা অবৈধ কার্যকলাপ এবং অন্যান্য নির্বাচনী অপরাধএবং উহার দন্ড এবং প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের আচরণ ও আচরণ বিধি ভংগেরদন্ড;
(ঢ) নির্বাচনী বিরোধ এবং উহার বিচার ও নিষপত্তি;
(ণ) অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ, ম্যাজিষ্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ, মামলার মেয়াদ সংক্রান্ত বিষয়াদি;
(ত) ভোট গ্রহণের দিন নির্বাচন সংক্রানত্দ দায়িত্ব পালনরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের গ্রেফতার করার ক্ষমতা; এবং
(থ) নির্বাচন সম্পর্কিত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়।
(২) কোন ব্যক্তি, উপ-ধারা () এর দফা () এ উলিস্নখিত-
(ক)নির্বাচনে দূর্নীতিমূলক বা অবৈধ কার্যকলাপ করিলে তিনি অনূ্যন ৩ (তিন) বৎসরকারাদন্ড অথবা অনধিক ১০ (দশ হাজার) টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিতহইবেন;
(খ) নির্বাচনী অপরাধ করিলে তিনি অনূ্যন ৬ (ছয়) মাস এবং অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড দন্ডিত হইবেন; এবং

(গ)আচরণ বিধির কোন বিধান লংঘন করিলে তিনি অনূ্যন ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ড অথবাঅনধিক ১০ (দশ হাজার) টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।

 

নিবার্চনী ফলাফল প্রকাশ

২১। চেয়ারম্যান এবং সদস্য হিসাবে নিবার্চিত সকল ব্যক্তির নাম নিবার্চন কমিশন, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে।

 

 

পঞ্চম অধ্যায়
নিবার্চনী বিরোধ

 

নিবার্চনী দরখাস্ত দাখিল

২২। (১) এই আইনের অধীনে অনুষ্ঠিত কোন নিবার্চন বা গৃহীত নিবার্চনী কাযর্ক্রমবিষয়ে নিবার্চন ট্রাইব্যুনাল ব্যতীত কোন আদালত বা অন্য কোন কতৃর্পক্ষেরনিকট আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না।
(২) কোন নিবার্চনের প্রাথীব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি উক্ত নিবার্চন বা নিবার্চনী কাযর্ক্রম বিষয়েআপত্তি উত্থাপন ও প্রতিকার প্রার্থনা করিয়া নিবার্চন ট্রাইব্যুনালে আবেদনকরিতে পারিবেন না।
(৩) এই আইনের ধারা ২৩ এর অধীন গঠিত নিবার্চন ট্রাইব্যুনালের বরাবরে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবার্চনী অভিযোগপত্র পেশ করিতে হইবে।
(৪) কোন আদালত -
(ক) পরিষদের কোন চেয়ারম্যান বা সদস্যের নিবার্চন মুলতবী রাখিতে;
) এই আইন অনুযায়ী নিবার্চিত কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যকে তাঁহার দায়িত্ব গ্রহণে বিরত রাখিতে ;
(গ) এই আইন অনুযায়ী নিবার্চিত কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যকে তাঁহার কাযার্লয়ে প্রবেশ করা হইতে বিরত রাখিতে-

নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে না।

২৩। (১) এই আইনের অধীনে নির্বাচন সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেনির্বাচন কমিশন, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপনের দ্বারা, একজন উপযুক্তপদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচনীট্রাইব্যুনাল এবং একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও একজনউপযুক্ত পদমর্যাদার নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যকনির্বাচনী আপিল ট্রাইবু্যনাল গঠন করিবে।

(২) কোন সংৰুদ্ধ ব্যক্তিনির্বাচিত চেয়ারম্যান বা সদস্য বা সদস্যগণের নাম সরকারী গেজেটে প্রকাশেরপরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্বাচনী ট্রাইবুনালে নির্বাচনী দরখাস্তদায়ের করিতে পারিবেন।

(৩) উপ-ধারা () অনুযায়ী গঠিত ট্রাইবুন্যালপরিষদের নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোন দরখাস্ত, উহা দায়ের করিবার ১৮০ (একশতআশি) দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিবে।

(৪) নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালেররায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নির্বাচনী আপিলট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করিতে পারিবেন।

(৫) উপ-ধারা () অনুযায়ী গঠিত নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল আপিল দায়ের করিবার ১২০ (একশত বিশ) দিনের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে।

(৬) নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

 

 

 

নির্বাচনী দরখাস্ত ও আপিল বদলীকরণের ক্ষমতা

 

২৪।নির্বাচনকমিশন নিজ উদ্যোগে অথবা পক্ষগণের কোন এক পক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে পেশকৃতআবেদনের প্রেক্ষিতে যে কোন পর্যায়ে একটি নির্বাচনী দরখাস্ত এক ট্রাইব্যুনালহইতে অন্য ট্রাইব্যুনালে অথবা একটি আপিল ট্রাইব্যুনাল হইতে অপর একটি আপিলট্রাইব্যুনালে বদলী করিতে পারিবে এবং যে ট্রাইব্যুনালে বা আপিলট্রাইব্যুনালে তাহা এইরূপ বদলী করা হয় সেই ট্রাইব্যুনাল বা আপিলট্রাইব্যুনাল উক্ত দরখাস্ত বা আপিল যে পর্যায়ে বদলী করা হইয়াছে সেই পর্যায়হইতে উহার বিচারকার্য চালাইয়া যাইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচনীদরখাস্ত যে ট্রাইব্যুনালে বদলী করা হইয়াছে সেই ট্রাইব্যুনাল উপযুক্ত মনেকরিলে ইতিপূর্বে পরীক্ষিত কোন সাক্ষী পুনরায় তলব বা পুনরায় পরীক্ষা করিতেপারিবে এবং অনুরূপভাবে আপিল ট্রাইব্যুনালও এই ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে।

<--break->

নিবার্চনী দরখাস্ত, আপিল, ইত্যাদি নিষ্পত্তি

 

২৫।নিবার্চনী দরখাস্ত ও আপিল দায়েরের পদ্ধতি, নিবার্চনী ট্রাইব্যুনাল ওনিবার্চনী আপিল ট্রাইব্যুনাল কতৃর্ক নিবার্চন বিরোধ নিষ্পত্তির পদ্ধতি, এখতিয়ার, ক্ষমতা, প্রতিকার এবং আনুষঙ্গিক সকল বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিতহইবে।

 

 

 

ষষ্ঠ অধ্যায়
যোগ্যতা ও অযোগ্যতা

 

 

 

পরিষদের সদস্যগণের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা

 

২৬। (১) কোন ব্যক্তি এই ধারার উপ-ধারা () এর বিধান সাপেক্ষে পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন, যদি-

(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হন;

(খ) তাঁহার বয়স পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হয়;

(গ) চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের যে কোন ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় তাঁহার নাম লিপিবদ্ধ থাকে;

(ঘ) সংরৰিত মহিলা আসনের সদস্যসহ অন্যান্য সদস্যদের ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় তাঁহার নাম লিপিবদ্ধ থাকে।

(২) কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচিত হইবার এবং থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি-

(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন বা হারান;

(খ) তাঁহাকে কোন আদালত অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করেন;

(গ) তিনি কোন আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হন এবং দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন;

(ঘ)তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অনূ্যন ২ (দুই) বৎসরের কারাদন্ডে দন্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তি লাভের পর ৫ (পাঁচ)বৎসর কাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে;

(ঙ) তিনি প্রজাতন্ত্রের বা পরিষদের বা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোন কর্মে লাভজনক সার্বক্ষণিক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন;

(চ) তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য বা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা সদস্য হন;

(ছ)তিনি বা তাঁহার পরিবারের উপর নির্ভরশীল কোন সদস্য সংশিস্নষ্ট পরিষদের কোনকাজ সমপাদনের বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার হন বা ইহার জন্য নিযুক্তঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা সংশ্লিষ্ট পরিষদের কোন বিষয়ে তাঁহারকোন প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে বা তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত অত্যাবশ্যককোন দ্রব্যের ডিলার হন;

(জ) মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার তারিখে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে কোন ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী রাখেন :

তবেশর্ত থাকে যে, কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত নিজস্ব বসবাসেরনিমিত্ত গৃহ-নির্মাণ অথবা ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ ইহার আওতাভুক্ত হইবে না ;

(ঝ) তাঁহার নিকট পরিষদ হইতে গৃহীত কোন ঋণ অনাদায়ী থাকে বা পরিষদের নিকট তাঁহার কোন আর্থিক দায়-দেনা থাকে;

(ঞ)তিনি স্থানীয় সরকার পরিষদ কিংবা সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত নিরীক্ষা প্রতিবেদনঅনুযায়ী পরিশোধের জন্য নির্ধারিত অর্থ সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার পরিষদকেপরিশোধ না করেন;

(ট) তিনি পরিষদের তহবিল তসরূফের কারণে দন্ডপ্রাপ্ত হন;

(ঠ)তিনি এই আইনে বর্ণিত অপরাধে অথবা নির্বাচনী অপরাধ সংক্রান্ত অপরাধেসংশ্লিষ্ট আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যুন ২(দুই) বৎসর কারাদন্ডেদন্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তি লাভের পর ৫ (পাঁচ) বৎসর কাল অতিবাহিত না হইয়াথাকে;

(ড) তিনি কোন সরকারি বা আধাসরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিতসংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমবায় সমিতি ইত্যাদি হইতে নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি. অসদাচরণ ইত্যাদি অপরাধে চাকুরিচ্যুত হইয়া ৫ (পাঁচ) বৎসরঅতিক্রান্ত না করেন;

(ঢ) তিনি বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দন্ডবিধির ধারা ১৮৯ ও ১৯২ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন;

(ণ) তিনি বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দন্ডবিধির ধারা ২১৩, ৩৩২, ৩৩৩ ও ৩৫৩ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন;

(ত) তিনি কোন আদালত কর্তৃক ফেরারী আসামী হিসাবে ঘোষিত হন;

(থ) জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আদালত বা ট্রাইবু্যনাল কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী হিসাবে দোষী সাব্যস্ত হন।

(৩)প্রত্যেক চেয়ারম্যান ও সদস্য পদপ্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় এই মর্মেএকটি হলফনামা দাখিল করিবেন যে, উপ-ধারা () অনুযায়ী তিনি চেয়ারম্যান বাসদস্য নির্বাচনের অযোগ্য নহেন।

 

একাধিক পদে প্রার্থীতায় বাঁধা

 

২৭। (১) কোন ব্যক্তি একই সাথে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে প্রার্থী হইতে পারিবেন না ।
(২) যদি কোন ব্যক্তি একই সাথে কোন পরিষদের একাধিক পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন, তাহা হইলে, তাহার সকল মনোনয়নপত্র বাতিল হইবে।
(৩) পরিষদের মেয়াদকালে কোন কারণে চেয়ারম্যান পদ শূন্য হইলে, কোন সদস্য চেয়ারম্যান পদে নিবার্চনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে পারিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত সদস্যকে স্বীয় পদ ত্যাগ করিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে হইবে।
(৪) কোন ব্যক্তি একই সংগে যে কোন স্থানীয় সরকার পরিষদের সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে পারিবেন না।

 

 

 

সপ্তম অধ্যায়
পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সম্পর্কিত বিধান

 

 

 

পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের শপথ বা ঘোষণা

 

২৮। (১) চেয়ারম্যান ও প্রত্যেক সদস্য তাঁহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে প্রথমতফসিলে উল্লিখিত ফরমে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোন ব্যক্তির সম্মুখে শপথগ্রহণ বা ঘোষণা প্রদান করিবেন এবং শপথপত্র বা ঘোষণাপত্রে স্বাৰরদান করিবেন।
(২) চেয়ারম্যান বা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত ব্যক্তিগণের নাম সরকারিগেজেটে প্রকাশিত হইবার ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান ও সকল সদস্যেরশপথ গ্রহণ বা ঘোষণার জন্য সরকার বা তদ্কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষপ্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।

 

পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের কাযর্কাল

 

২৯। (১) কোন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, সংশ্লিষ্ট পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর সময়েরজন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।
(২) চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নামসরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার তারিখ হইতে পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসেরমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হইতে হইবে ঃ

তবে শর্তথাকে যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নবগঠিত পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত না হইলেসরকার উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে সভা আহ্বানের জন্য দায়িত্ব অর্পণ করিতে পারিবেএবং অনুরূপভাবে অনুষ্ঠিত সভা পরিষদের প্রথম সভা হিসাবে গণ্য হইবে।
(৩)পরিষদ গঠনের জন্য কোন সাধারণ নির্বাচন ঐ পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তীসাধারণ নির্বাচনের তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর পূর্ণ হইবার ১৮০ (এক শত আশি)দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে।
(৪) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষে নির্বাচনের পর উহার তিন-চতুর্থাংশ সদস্য শপথগ্রহণ করিলে ইউনিয়নটি যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
ব্যাখ্যাঃগঠিত পরিষদের মোট সদস্যদের তিন-চতুর্থাংশ নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভগ্নাংশেরউদ্ভব হইলে এবং তাহা দশমিক পাঁচ শুন্য শতাংশের কম হইলে অগ্রাহ্য করিতে হইবেএবং দশমিক পাঁচ শুন্য শতাংশ বা তার বেশী হইলে তাহা এক বলিয়া গণ্য করিতেহইবে।
(৫) দৈব-দুর্বিপাকজনিত বা অন্যবিধ কোন কারণে নির্ধারিত ৫ (পাঁচ) বৎসর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হইলে, সরকার লিখিতআদেশ দ্বারা, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিংবা অনধিক ৯০ (নব্বই) দিনপর্যন্ত, যাহা আগে ঘটিবে, সংশ্লিষ্ট পরিষদকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্যক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে।

 

দায়িত্ব হস্তান্তর

 

৩০।পরিষদ গঠনের পর পূববর্তী চেয়ারম্যান বা প্যানেল চেয়ারম্যানেরদায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য তাঁহার দখলে বা নিয়ন্ত্রণে থাকা পরিষদের সকল নগদঅর্থ, পরিসম্পদ, দলিল দস্তাবেজ, রেজিষ্টার ও সীলমোহর যতশীঘ্র সম্ভব অথবাউপজেলা নিবার্হী অফিসার কতৃর্ক স্থিরীকৃত তারিখ, সময় ও স্থানে নতুননিবার্চিত চেয়ারম্যান বা, ক্ষেত্রমত, মনোনীত প্যানেল চেয়ারম্যান বাচেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রাপ্ত সদস্যের নিকট পরিষদের সচিব ও উপজেলা নিবার্হীঅফিসারের মনোনীত একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বুঝাইয়া দিবেন।

 

ব্যত্যয়ের দণ্ড

 

৩১। (১) যদি কোন চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রাপ্ত কোন সদস্য ধারা৩০ অনুযায়ী নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তরকরিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে তিনি ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা পযর্ন্তঅর্থদণ্ডে দণ্ডণীয় হইবেন।
(২) কোন চেয়ারম্যান বা সদস্য ধারা২৬ () অনুযায়ী তাহার অযোগ্যতা সম্পর্কে মিথ্যা হলফনামা দাখিল করিলে তিনিতিন বৎসর পযর্ন্ত মেয়াদে কারাদণ্ড অথবা ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ডঅথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের পদত্যাগ

 

৩২। (১) কোন সদস্য পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর তাহার পদত্যাগ করিবার অভিপ্রায়লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপ পদত্যাগ পত্রচেয়ারম্যান কতৃর্ক গৃহীত হওয়ার সাথে সাথে উক্ত সদস্যের পদ শুন্য হইয়াছেবলিয়া গণ্য হইবে; চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট সদস্যের পদত্যাগ পত্র গৃহীত হওয়ারবিষয়টি অনধিক ৭ (সাত) দিনের মধ্যে উপজেলা নিবার্হী অফিসারকে অবহিত করিবেন।
(২)চেয়ারম্যান এতদুদ্দেশ্যে উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট, তাহার পদত্যাগকরিবার অভিপ্রায় লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং উক্তপদত্যাগ পত্র গৃহীত হওয়ার সাথে সাথে উক্ত চেয়ারম্যানের পদ শুন্য হইবে।
(৩)উপ-ধারা () () এর অধীন পদত্যাগের বিষয়টি উপজেলা নিবার্হী অফিসার অনধিক৭ (সাত) দিনের মধ্যে পরিষদ, নিবার্চন কমিশন এবং সরকারকে অবহিত করিবেন।

 

চেয়ারম্যানের প্যানেল

 

৩৩। (১) পরিষদ গঠিত হইবার পর প্রথম অনুষ্ঠিত সভার ৩০ (ত্রিশ) কাযদিবসের মধ্যেঅগ্রাধিকারক্রমে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি চেয়ারম্যানের প্যানেল, সদস্যগণতাহাদের নিজেদের মধ্য হইতে নিবার্চন করিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, নিবার্চিত তিনজন চেয়ারম্যান প্যানেলের মধ্যে কমপক্ষে একজন সংরক্ষিত আসনেরমহিলা সদস্যগণের মধ্য হইতে নিবার্চিত হইবেন।
(২) অনুপস্থিতি, অসুস্থতাহেতু বা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলেতিনি পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পযর্ন্ত চেয়ারম্যানেরপ্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন সদস্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকরিবেন।
(৩) পদত্যাগ, অপসারণ, মৃত্যুজনিত অথবা অন্য যে কোন কারণেচেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে নিবার্চিত নতুন চেয়ারম্যান কাযর্ভার গ্রহণ নাকরা পযর্ন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন সদস্যচেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৪) এই আইনের বিধান অনুযায়ীচেয়ারম্যানের প্যানেলভুক্ত সদস্যগণ অযোগ্য হইলে অথবা ব্যক্তিগত কারণেদায়িত্ব পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে নতুনচেয়ারম্যানের প্যানেল তৈরী করা যাইবে।
(৫) উপ-ধারা () ()অনুযায়ী সদস্যদের মধ্য হইতে চেয়ারম্যানের প্যানেল প্রস্তুত করা না হইলে, সরকার প্রয়োজন অনুসারে, সদস্যগণের মধ্য হইতে চেয়ারম্যানের প্যানেল তৈরিকরিতে পারিবে।

 

চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের সাময়িক বরখাস্তকরণ ও অপসারণ

 

৩৪। (১) যে ৰেত্রে কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের বিরুদ্ধে উপ-ধারা () এবর্ণিত অপরাধে অপসারণের জন্য কার্যক্রম আরম্ভ করা হইয়াছে অথবা তাঁহারবিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে অথবা অপরাধআদালত কর্তৃক আমলে নেওয়া হইয়াছে, সেইক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপৰের মতেচেয়ারম্যান অথবা সদস্য কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগ পরিষদের স্বার্থের পরিপন্থীঅথবা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন না হইলে, সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমেচেয়ারম্যান অথবা সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবে।
(২)উপ-ধারা () এর অধীনে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে আদেশপ্রাপ্তির ৩ (তিন) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ধারা ৩৩ এর বিধানমতেনির্বাচিত প্যানেল চেয়ারম্যানের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করিবেন এবং উক্তপ্যানেল চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীতকার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা চেয়ারম্যান অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলেনতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।
)উপ-ধারা () এর অধীনে পরিষদের কোন সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশপ্রদান করা হইলে উক্ত সদস্যের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্তঅথবা উক্ত সদস্য অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন সদস্য নির্বাচিত না হওয়াপর্যনত্দ পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে অপর একজন সদস্য উক্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৪) চেয়ারম্যান বা সদস্য তাঁহার স্বীয় পদ হইতে অপসারণযোগ্য হইবেন, যদি, তিনি-
(ক) যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে পরিষদের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন;
(খ)পরিষদ বা রাষ্ট্রের স্বার্থের হানিকর কোন কার্যকলাপে জড়িত থাকেন, অথবাদুর্নীতি বা অসদাচরণ বা নৈতিক স্খলনজনিত কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়াদন্ডপ্রাপ্ত হইয়া থাকেন;

(গ) তাঁহার দায়িত্ব পালন করিতে অস্বীকার করেন অথবা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন;
(ঘ)অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দোষে দোষী হন অথবা পরিষদের কোন অর্থ বাসমপত্তির কোন ক্ষতি সাধন বা উহার আত্মসাতের বা অপপ্রয়োগের জন্য দায়ী হন;
(ঙ) এই আইনের ধারা ২৬ () অনুযায়ী নির্বাচনের অযোগ্য ছিলেন বলিয়া নির্বাচনের পর যদি প্রমাণিত হয়;
(চ) বার্ষিক ১২ (বার) টি মাসিক সভার স্থলে ন্যূনতম ৯ (নয়) টি সভা গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতীত অনুষ্ঠান করিতে ব্যর্থ হন;
(ছ) নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দাখিল না করেন কিংবা দাখিলকৃত হিসাবে অসত্য তথ্য প্রদান করেন; অথবা
(জ) বিনা অনুমতিতে দেশ ত্যাগ করেন অথবা অনুমতিক্রমে দেশ ত্যাগের পর সেখানে অননুমোদিতভাবে অবস্থান করেন।
ব্যাখ্যাঃ এই উপ-ধারায় 'অসদাচরণ' বলিতে ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্তব্যে অবহেলা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ইচ্ছাকৃত কুশাসনও বুঝাইবে।
(৫)সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ, সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, উপ-ধারা () এ উল্লিখিত এক বা একাধিক কারণে চেয়ারম্যান বা সদস্যকে অপসারণকরিতে পারিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্তকরিবার পূর্বে বিধি মোতাবেক তদন্ত করিতে হইবে ও অভিযুক্তকে আত্মপক্ষসমর্থনের সুযোগ দিতে হইবে।
(৬) কোন চেয়ারম্যান বা সদস্য এরঅপসারণের প্রস্তাব, সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃকঅনুমোদন লাভের পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অপসারিত হইবেন।
(৭) পরিষদেরকোন চেয়ারম্যান বা সদস্যকে উপ-ধারা () অনুযায়ী তাঁহার পদ হইতে অপসারণ করাহইলে তিনি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত আদেশের তারিখ হইতে৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ উক্তআপিলটি নিষপত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপসারণ আদেশটি স্থগিত রাখিতে পারিবেন এবংআপিলকারীকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দানের পর উক্ত আদেশটি পরিবর্তন, বাতিলবা বহাল রাখিতে পারিবেন।
(৮) আপিল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উপ-ধারা () এর অধীন প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
(৯)এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুযায়ীঅপসারিত কোন ব্যক্তি কোন পদে সংশিস্নষ্ট পরিষদের কার্যকালের অবশিষ্টমেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না।

 

চেয়ারম্যান বা সদস্য পদ শূন্য হওয়া

 

৩৫। (১) চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদ শূন্য হইবে, যদি-
(ক) তিনি ধারা ২৬ () অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা সদস্য হইবার অযোগ্য হইয়া পড়েন;
(খ) তিনি ধারা ৩৪ অনুযায়ী সাময়িকভাবে বরখাস্ত হন বা অপসারিত হন;
(গ) তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধারা ২৮ () এ বর্ণিত শপথ গ্রহণ করিতে ব্যর্থ হন;
(ঘ) তিনি ধারা ৩২ এর অধীন পদত্যাগ করেন;
(ঙ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন; অথবা
(চ) ধারা ৩৯ অনুযায়ী তাহার বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
(২)উপ-ধারা () অনুযায়ী চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের পদ শূন্য হইলে উপজেলানির্বাহী অফিসার গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করিয়া পদটি শূন্য ঘোষণা করিবেন।

 

শূন্য পদ পূরণ

 

৩৬।যদি কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্যের পদ তাঁহার মৃত্যু, পদত্যাগ, অপসারণবা অন্যবিধ কারণে তাঁহার মেয়াদ পূর্তির কমপক্ষে ১৮০ (একশত আশি) দিন পূর্বেশূন্য হয়, তাহা হইলে, উক্ত শূন্যতার তারিখ হইতে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যেঅবশিষ্ট সময়ের জন্য শূন্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠান করিতে হইবে:
তবেশর্ত থাকে যে, দৈব দুর্বিপাক জনিত কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হইলেনির্বাচন কমিশন নির্বাচনের জন্য সুবিধাজনক তারিখ নির্ধারণ করিতে পারিবে।

 

সদস্যপদ পুনর্বহাল

 

৩৭।পরিষদের কোন নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা সদস্য এই আইনের বিধান অনুযায়ীসাময়িকভাবে বরখাস্ত বা অপসারিত হইয়া অথবা অযোগ্য ঘোষিত হইয়া সদস্যপদহারাইবার পর আপিলে তাঁহার উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্ত আদেশ বা অপসারণ আদেশ রদবা বাতিল বা প্রত্যাহার হইলে বা তাঁহার অযোগ্যতা অবলোপন হইলে, তাহারসদস্যপদ পুনর্বহাল হইবে এবং তিনি অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্বপদে বহাল হইবেন।

 

চেয়ারম্যান বা সদস্যগণের অধিকার ও দায়বদ্ধতা

 

৩৮। (১) পরিষদের চেয়ারম্যান বা প্রত্যেক সদস্যের এই আইন ও সংশিস্নষ্টবিধানাবলী সাপেক্ষে পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণেরঅধিকার থাকিবে।

(২) পরিষদের প্রত্যেক সদস্য নির্ধারিত পদ্ধতিতেপরিষদের চেয়ারম্যান অথবা সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতির নিকট পরিষদের বাস্থায়ী কমিটির প্রশাসনিক এখতিয়ারভুক্ত বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন বা কৈফিয়ৎদাবীকরিতে পারিবেন।
(৩) পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট নোটিশ প্রদান করিয়াপরিষদের যে কোন সদস্য অফিস চলাকালীন সময়ে, গোপনীয় নথিপত্র ব্যতীত, রেকর্ড ওনথিপত্র দেখিতে পারিবেন।
(৪) পরিষদের চেয়ারম্যান বা প্রত্যেকসদস্য পরিষদ বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়িত কোন কাজ বা প্রকল্পেরত্রুটি-বিচু্যতি সমপর্কে পরিষদের মনোযোগ আকর্ষণ করিতে পারিবেন।
(৫)পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সদস্যগণ এই আইনের বিধানঅনুযায়ী জনস্বার্থে পরিষদের কার্য পরিচালনা করিবেন এবং পরিষদের নিকটযৌথভাবে দায়ী থাকিবেন।
(৬) সংরক্ষিত আসনের সদস্য এবং সাধারন আসনের সদস্যদের দায়িত্ব এবং কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

 

অনাস্থা প্রস্তাব

 

৩৯। (১) এই ধারার বিধান সাপেক্ষে পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য বা পরিষদের উপর সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে।

(২)উপ-ধারা () অনুযায়ী অনাস্থা প্রস্তাব পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যেরস্বাক্ষরে লিখিতভাবে উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট পরিষদের যে কোন একজনসদস্য ব্যক্তিগতভাবে দাখিল করিবেন।
(৩) অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তিরপর উপজেলা নিবার্হী অফিসার ১০ (দশ) কাযদিবসের মধ্যে একজন কর্মকর্তা নিয়োগকরিবেন এবং উক্ত কর্মকর্তা অভিযোগসমূহের বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য ১০ (দশ) কাযর্দিবসের সময় প্রদান করিয়া অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বা সদস্যকে কারণদর্শানোর নোটিশ দিবেন।
(৪) জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হইলে উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা জবাব প্রাপ্তির অনধিক ৩০ (ত্রিশ)কাযর্দিবসের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবে যে সকল অভিযোগের বর্ণনা করা হয়েছে, সেসকল অভিযোগ তদন্ত করিবেন।
(৫) তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিতহইলে উপ-ধারা () অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা অনধিক ১৫ (পনের) কাযর্দিবসেরমধ্যে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বা সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকল নিবার্চিত সদস্যেরনিকট সভার নোটিশ প্রেরণ নিশ্চিতকরণপূবর্ক পরিষদের বিশেষ সভা আহবান করিবেন।
(৬)চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে প্যানেল চেয়ারম্যান (ক্রমানুসারে) এবং কোন সদস্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রেপরিষদের চেয়ারম্যান সভায় সভাপতিত্ব করিবেনঃ
তবে শর্ত থাকে যে, চেয়ারম্যান বা প্যানেল চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে উপস্থিত সদস্য্যগণেরমধ্যে একজন সদস্যকে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সভাপতি নিবার্চিত করা যাইবে।
(৭) উপ-ধারা () অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা সভায় একজন পযবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত থাকিবেন।
(৮)উপ-ধারা () এর উদ্দেশ্যে আহুত সভাটি নিয়ন্ত্রণ বহিভূর্ত কোন কারণ ছাড়াস্থগিত করা যাইবে না এবং মোট নিবার্চিত সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যসমন্বয়ে সভার কোরাম গঠিত হইবে।
(৯) সভা শুরু হইবার তিন ঘন্টার মধ্যেউন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব না হইলে অনাস্থাপ্রস্তাবটির উপর গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করিতে হইবে।
(১০)সভার সভাপতি অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন প্রকাশ্য মতামতপ্রকাশ করিবেন না তবে তিনি ব্যালটের মাধ্যমে উপ-ধারা () অনুযায়ী ভোটপ্রদান করিতে পরিবেন কিন্তু তিনি নির্ণায়ক বা দ্বিতীয় ভোট দিতে পারিবেন না।
(১১) অনাস্থা প্রস্তাবটি কমপক্ষে ৯ (নয়) জন সদস্য কতৃর্ক ভোটে গৃহীত হইতে হইবে।
(১২)উপ-ধারা () অনুযায়ী নিযুক্ত কর্মকর্তা সভা শেষ হইবার পর আনুষঙ্গিককাগজপত্র সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং অনাস্থা প্রস্তাবের কপি, ব্যালটপেপার, ভোটের ফলাফলসহ সভার কাযবিবরণী প্রস্তুত করিবেন ।
(১৩) সরকার, উপযুক্ত বিবেচনা করিলে কমিশনের পরামর্শ গ্রহণপূবর্ক, অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন অথবা অননুমোদন করিবে।

(১৪)অনাস্থা প্রস্তাবটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটে গৃহীত না হইলে অথবা কোরামেরঅভাবে সভা অনুষ্ঠিত না হইলে উক্ত তারিখের পর ৬ (ছয়) মাস অতিক্রান্ত না হইলেসংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বা সদস্যের বিরুদ্ধে অনুরূপ কোন অনাস্থা প্রস্তাবআনয়ন করা যাইবে না।
(১৫) পরিষদের চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যের দায়িত্বভার গ্রহণের ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে তাহার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে না।

 

চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের ছুটি

 

৪০।কোন চেয়ারম্যান বা কোন সদস্যকে পরিষদ যুক্তিসঙ্গত কারণে এক বৎসরে সবোর্চ্চ৩ (তিন) মাস ছুটি মঞ্জুর করিতে পারিবে; তবে ৩ (তিন) মাসের অধিক ছুটিপ্রয়োজন হইলে সরকারের অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, মহিলা চেয়ারম্যান বা সদস্যের মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগের ক্ষেত্রে সরকারি বিধি বিধান প্রযোজ্য হইবে।

 

সম্পত্তি সম্পকির্ত ঘোষণা

 

৪১।চেয়ারম্যান ও সদস্য তাঁহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে তাঁহার এবং তাঁহারপরিবারের কোন সদস্যের স্বত্ব, দখল বা স্বার্থ আছে এই প্রকার যাবতীয় স্থাবর ওঅস্থাবর সম্পত্তির একটি লিখিত বিবরণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে ওনির্ধারিত ব্যক্তির নিকট দাখিল করিবেন।

ব্যাখ্যা।-"পরিবারের সদস্য"বলিতে চেয়ারম্যান ও সদস্যের স্বামী বা স্ত্রী এবং তাঁহার সংগে বসবাসকারীএবং তাঁহার উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল তাঁহার ছেলে-মেয়ে, পিতা, মাতা ওভাই-বোনকে বুঝাইবে।

 

 

 

 

অষ্টম অধ্যায়
পরিষদের সভা, ক্ষমতা ও কাযাবর্লী

 

 

 

পরিষদের সভা

 

৪২। (১) প্রত্যেক পরিষদ, পরিষদের কাযার্লয়ে প্রতি মাসে ন্যূনতম একটি সভাঅনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করিবে এবং উক্ত সভা অফিস সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে।

(২)পরিষদের ৫০% সদস্য তলবী সভা আহবানের জন্য চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অনুরোধজানাইলে তিনি ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে অনুষ্ঠেয় একটি সভার তারিখ ও সময়নির্ধারণ করিয়া সভা অনুষ্ঠানের কমপক্ষে ৭ (সাত) দিন পূবে পরিষদের সদস্যগণকেনোটিশ প্রদান করিবেন।

(৩) পরিষদের চেয়ারম্যান উপ-ধারা () অনুযায়ীতলবী সভা আহবান করিতে ব্যর্থ হইলে প্যানেল চেয়ারম্যান (ক্রমানুসারে) ১০ (দশ) দিনের মধ্যে অনুষ্ঠেয় সভা আহবান করিয়া কমপক্ষে ৭ (সাত) দিন পূবেপরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণকে নোটিশ প্রদান করিবেন; উক্তরূপ সভা পরিষদেরকাযার্লয়ে নির্ধারিত তারিখে অফিস চলাকালীন সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৪)তলবী সভা পরিচালনাকালীন সময়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার কতৃর্ক নিয়োগকৃত একজনকর্মকর্তা পযবের্ক্ষক হিসেবে উপস্থিত থাকিতে পারিবেন, যিনি উক্তরূপ তলবীসভা পরিচালনা ও সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসারেরনিকট একটি লিখিত প্রতিবেদন সভা অনুষ্ঠানের ৭ (সাত) দিনের মধ্যে দাখিলকরিবেন।

(৫) চেয়ারম্যান অথবা তাঁহার অনুপস্থিতিতে তাঁহার দায়িত্বপালনকারী ব্যক্তি, প্রয়োজনে, যে কোন সময় পরিষদের বিশেষ সভা আহবান করিতেপারিবেন।

(৬) সদস্যগণের মোট সংখ্যার এক তৃতীয়াংশের উপস্থিতিতে কোরামহইবে, তবে কোরামের অভাবে কোন সভা মুলতবী হইলে মুলতবী সভায় কোন কোরামেরপ্রয়োজন হইবে না।

(৭) এই আইনে ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে, পরিষদের সভায় সকল সিদ্ধান্ত উপস্থিত সদস্যগণের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হইবে।



(৮)প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে এবং ভোটের সমতারক্ষেত্রে সভাপতি একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদান করিতে পারিবেন।

(৯)পরিষদের সভায় চেয়ারম্যান অথবা তাঁহার অনুপস্থিতিতে অগ্রাধিকারেরক্রমানুসারে চেয়ারম্যান প্যানেলের সদস্য অথবা উভয়ের অনুপস্থিতিতে, উপস্থিতসদস্যগণ কতৃর্ক নিবার্চিত কোন সদস্য সভাপতিত্ব করিবেন।

(১০) সরকারকতৃর্ক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত কর্মকর্তাগণ পরিষদের আমন্ত্রণে পরিষদের সভায়যোগদান এবং সভার আলোচনায় অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন, তবে তাহাদের ভোটাধিকারথাকিবে না।

(১১) কোন্ প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হইয়াছে বা হয় নাই তাহা সভাপতি উক্ত সভায় স্পষ্ট করিয়া জানাইয়া দিবেন।

(১২)সভার আলোচ্যসূচিতে কারিগরি ও গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে কোনো বিশেষজ্ঞের মতামতপ্রয়োজন হইলে পরিষদ উক্ত বিষয় বা বিষয়সমূহের উপর মতামত প্রদানের জন্য এক বাএকাধিক বিশেষজ্ঞকে সভায় আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে।

 

 

 

পরিষদের সভায় সম্পাদনীয় কার্য তালিকা

 

৪৩।পরিষদের কোন মূলতবী সভা ব্যতীত পরিষদের অন্য প্রত্যেক সভায় সম্পাদনীয়কাযাবর্লীর একটি তালিকা, উক্তরূপ সভার জন্য নির্ধারিত সময়ের ন্যূনতম ৭ (সাত) দিন পূবে পরিষদের প্রত্যেক সদস্যের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং সভায়উপস্থিত সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠের অনুমোদন ব্যতীত, উক্তরূপ তালিকা বহির্ভূতকোন বিষয় সভায় আলোচনার জন্য আনীত হইবে না বা সম্পাদিত হইবে না; তবে, যদিচেয়ারম্যান মনে করেন যে, এইরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব হইয়াছে যাহার জন্য পরিষদেরএকটি জরুরি সভা আহবান করা সমীচীন, তাহা হইলে, তিনি সদস্যগণকে ৩ (তিন)দিনের নোটিশ প্রদানের পর এইরূপ একটি সভা আহবান করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপসভায় নির্ধারিত আলোচ্যসূচী ব্যতীত অন্য কোন বিষয় আলোচনা করা যাইবে না।

 

 

 

পরিষদের কাযাবর্লী কাযর্ধারায়

 

৪৪। (১) পরিষদের সকল কাযাবর্লী বিধি দ্বারা নির্ধারিত সীমার মধ্যে ও পদ্ধতিতেপরিষদের সভায় অথবা স্থায়ী কমিটিসমূহের সভায় অথবা উহার চেয়ারম্যান, সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কতৃর্ক কাযর্ধারায় হইবে।

(২) কোন পদ শূন্যথাকিলে বা পরিষদের গঠন প্রক্রিয়ায় কোন ত্রুটি রহিয়াছে কিংবা পরিষদের বৈঠকেউপস্থিত হইবার বা ভোটদানে বা অন্য উপায়ে ইহার কাযর্ধারায় অংশগ্রহণে অধিকারনা থাকা সত্ত্বেও কোন ব্যক্তি অনুরূপ কায করিয়াছেন কেবল এই কারণে পরিষদেরকোন কায বা কাযধারা অবৈধ হইবে না।

(৩) পরিষদের প্রত্যেক সভার কাযবিবরণী এই উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত একটি বইয়ে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।

(৪)সভার কাযবিবরণী স্বাক্ষরিত হইবার পর যথাশীঘ্র সম্ভব পরিষদের সকল সিদ্ধান্তউপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিয়া অনুলিপি ডেপুটি কমিশনারেরনিকট প্রেরণ করিতে হইবে।

 

স্থায়ী কমিটি গঠন ও উহার কাযাবর্লী

 

৪৫। (১) ইউনিয়ন পরিষদ উহার কাযাবর্লী সুচারুরূপে সম্পাদন করিবার জন্য পরিষদেরদায়িত্বভার গ্রহণের পর প্রথম সভা অনুষ্ঠানের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যেনিম্নবর্ণিত বিষয়াদির প্রত্যেকটি সম্পর্কে একটি করিয়া স্থায়ী কমিটি গঠনকরিবে যাহার মেয়াদ সবোর্চ্চ দুই বৎসর ছয় মাস হইবে, যথাঃ-

(ক) অর্থ ও সংস্থাপন;
(খ) হিসাব নিরীক্ষা ও হিসাব রক্ষণ;
(গ) কর নিরুপন ও আদায়;
(ঘ) শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা;
(ঙ) কৃষি, মৎস্য ও পশু সম্পদ ও অন্যান্য অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কাজ;
(চ) পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, ইত্যাদি;
(ছ) আইন-শৃংখলা রক্ষা;
(জ) জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন;
(ঝ) স্যানিটেশন, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাশন;
(ঞ) সমাজকল্যাণ ও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা;
(ট) পরিবেশ উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ;
(ঠ) পারিবারিক বিরোধ নিরসন, নারী ও শিশু কল্যাণ (পাবর্ত্য চট্রগ্রামের অধিবাসীদের জন্য প্রযোজ্য হইবে না);
(ড) সংস্কৃতি ও খেলাধুলা।

(২)উপ-ধারা() এ উল্লিখিত স্থায়ী কমিটি ব্যতীত পরিষদ, এই আইনের বিধানসাপেক্ষে, প্রয়োজনে, ডেপুটি কমিশনারের অনুমোদনক্রমে, অতিরিক্ত স্থায়ী কমিটিগঠন করিতে পারিবে।

(৩) স্থায়ী কমিটির সভাপতি কো-অপট সদস্য ব্যতীতপরিষদের সদস্যগণের মধ্য হইতে নিবার্চিত হইবেন এবং মহিলাদের জন্য সংরক্ষিতআসন হইতে নিবার্চিত সদস্যগণ অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ স্থায়ী কমিটির সভাপতিথাকিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শুধুমাত্র আইন শৃংখলা বিষয়ক কমিটির সভাপতি থাকিবেন।

(৪)স্থায়ী কমিটি পাঁচ হইতে সাত সদস্য বিশিষ্ট হইবে এবং কমিটি প্রয়োজনে, সংশিস্নষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোন একজন ব্যক্তিকে কমিটির সদস্য হিসাবে কো-অপটকরিতে পারিবে, তবে কো-অপট সদস্যের কোন ভোটাধিকার থাকিবে না।

(৫)অন্যান্য সদস্যগণ স্থানীয় জনসাধারণের মধ্য হইতে সংশ্লিষ্ট কমিটিতে অবদানরাখিবার যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্য হইতে মনোনীত হইবেন।
(৬)স্থায়ী কমিটির সুপারিশ পরিষদের পরবর্তী সভায় বিবেচনার পর গৃহীত হইবে; তবেকোন সুপারিশ ইউনিয়ন পরিষদে গৃহীত না হইলে তাহার যথার্থতা ও কারণ লিখিতভাবেস্থায়ী কমিটিকে জানাইতে হইবে।
(৭) স্থায়ী কমিটির সকল কার্যধারা পরিষদের সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেৰে চূড়ান্ত হইবে।
(৮) নিম্নলিখিত কারণে পরিষদ কোন স্থায়ী কমিটি ভাঙ্গিয়া দিতে পারিবে, যথা :-
(ক) বিধি মোতাবেক নিয়মিত সভা আহ্বান করিতে না পারিলে;
(খ) নির্ধারিত ৰেত্রে ক্রমাগতভাবে পরিষদকে পরামর্শ প্রদানে ব্যর্থ হইলে; অথবা
(গ) এই আইন বা অন্য কোন আইনের বিধান বহির্ভূত কোন কাজ করিলে।
(৯) প্রত্যেক স্থায়ী কমিটি প্রতি দুইমাস অনত্দর সভায় মিলিত হইবে, তবে প্রয়োজনে অতিরিক্ত সভা অনুষ্ঠান করিতে পারিবে।
(১০)স্থায়ী কমিটির কার্যাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে, তবে উক্তরূপপ্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের সাধারণ সভায় স্থায়ী কমিটিরকার্যাবলী নিরূপন করা যাইবে।

 

পরিষদের নিবার্হী ক্ষমতা

 

৪৬। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য সাধন এবং পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকল্পে চেয়ারম্যান পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন।
(২) এই আইনের অন্যান্য ধারায় বর্ণিত বিষয়সমূহকে ক্ষুণ্ন না করিয়া চেয়ারম্যান নিম্নরূপ দায়িত্বসমূহ পালন করিবেন, যথা :-
(ক) তিনি পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং সভা পরিচালনা করিবেন;
(খ) পরিষদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাজ কর্ম তদারকী ও নিয়ন্ত্রণ করিবেন এবং তাঁহাদের গোপনীয় প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবেন;
(গ) সরকার বা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত ব্যয় সীমা পর্যন্ত ব্যয় নির্বাহ করিবেন;
(ঘ) তিনি বা পরিষদের সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে পরিষদের সকল আয় ব্যয়ের হিসাব পরিচালনা করিবেন;
(ঙ) পরিষদের ব্যয় মিটানো এবং পাওনা আদায়ের জন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে ক্ষমতা অর্পণ করিবেন;
(চ) এই আইনের অধীন প্রয়োজনীয় সকল বিবরণী ও প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবেন;

(ছ) এই আইন বা বিধি দ্বারা আরোপিত অন্যান্য ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৩)চেয়ারম্যান, পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে, আইন, অধ্যাদেশ বা বিধি-বিধান এরপরিপন্থী নয়, এইরূপ জনস্বার্থ বা জনগুরম্নত্বপূর্ণ কোন জরম্নরি কাজসমপাদনের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবেন, এবং এই ধরনের কার্য সমপাদনের ব্যয়ভারপরিষদ তহবিল হইতে বহনের নির্দেশ দিতে পারিবেন।
(৪) উপ-ধারা ()অনুযায়ী গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে চেয়ারম্যান পরিষদের পরবর্তী সভায়প্রতিবেদন উপস্থাপন করিবেন এবং উক্ত প্রতিবেদন পরিষদের সভায় অনুমোদিত হইতেহইবে।
(৫) উপ-ধারা (), (২),(৩) () এ বর্ণিত দায়িত্ব ছাড়াও পরিষদের চেয়ারম্যান নিম্নবর্ণিত ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন, যথা :-
(ক)তিনি পরিষদের সভায় পরিষদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ ও অন্যান্যসরকারি দপ্তরের সংশ্লিষ্টকর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের উপস্থিতি নিশ্চিতকরিবেন;
(খ) এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির পরিপন্থী এবং প্রশাসনিকবিশৃঙ্খলার কারণে সচিব এবং হস্তান্তরিত অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তা ওকর্মচারী ব্যতীত পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্য কর্মচারীগণকে প্রয়োজনেযথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া সাময়িক বরখাসত্দ করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, পরিষদের পরবর্তী সাধারণ সভায় উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্ত অনুমোদিত হইতে হইবে অন্যথায় উহা কার্যকর হইবে না;

(গ)পরিষদের সচিবের নিকট হইতে পরিষদের প্রশাসনিক বিষয় সংক্রান্ত যে কোনক্লাসিফাইড রেকর্ড বা নথি লিখিতভাবে তলব করিতে এবং আইন ও নির্ধারিতপদ্ধতিতে আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন; তবে তিনি এইরূপ কোন ক্লাসিফাইড রেকর্ডবা নথি তলব করিতে পারিবেন না, যাহা সম্পূর্ণরূপে সচিব বা সংশ্লিষ্টকর্মকর্তার নিজস্ব তত্ত্বাবধানে থাকিবে;

(ঘ) এই আইন বা বিধি, প্রবিধান, ইত্যাদির পরিপন্থী এবং প্রশাসনিক বিশৃংখলা সৃষ্টির কারণে ইউনিয়নপর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন অন্যান্যকর্মচারীদের বিরম্নদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য প্রতিবেদন প্রেরণ করিতে পারিবেন;

(ঙ) তাঁহারবিবেচনায় পরিষদের কোন সিদ্ধান্ত এই আইন বা অন্য কোন আইন বা বিধি-বিধানেরপরিপন্থী হইলে, অথবা উক্তরূপ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হইলে উহা জনস্বাস্থ্য, জনস্বার্থ ও জননিরাপত্তা বিপন্ন করিবে বলিয়া বিবেচিত হইলে, তিনি উহাসরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(৬) পরিষদের নির্বাহী বা অন্য কোনকার্য পরিষদের নামে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ করা হইবে এবং উহা নির্ধারিতপদ্ধতিতে প্রমাণিকৃত হইতে হইবে।

(৭) পরিষদের দৈনন্দিন সেবাপ্রদানমূলক দায়িত্ব ত্বরান্বিত করিবার লক্ষ্যে কর্মকর্তাদের মধ্যে নির্বাহীক্ষমতা বিভাজনের প্রস্তাব পরিষদের সভায় অনুমোদিত হইতে হইবে এবং, প্রয়োজনবোধে, সময়ে সময়ে, ইহা সংশোধনের এখতিয়ার পরিষদের থাকিবে।

 

পরিষদের কাযাবর্লী

 

৪৭। (১) পরিষদের প্রধান কার্যাবলী হইবে নিম্নরূপ, যথা:-
) প্রশাসন ও সংস্থাপন বিষয়াদি;
(খ) জনশৃংখলা রৰা;
(গ) জনকল্যাণমূলক কার্য সমপর্কিত সেবা; এবং
(ঘ) স্থানীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সমপর্কিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
(২) উপ-ধারা () এ উল্লিখিত প্রধান কার্যাবলীর উপর ভিত্তি করিয়া পরিষদের কার্যাবলী দ্বিতীয় তফসিলে বর্ণিত হইল।
(৩)উপ-ধারা () () এ যাহাই থাকুক না কেন, বিশেষ করিয়া, এবং উক্তরূপউপ-ধারাসমূহের সামগ্রিকতাকে ৰুণ্ন না করিয়া, সরকার সংরক্ষিত আসনের মহিলাসদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিধি দ্বারা নির্ধারণ করিতে পারিবে। তবে ইউনিয়নপরিষদের উন্নয়ন প্রকল্পের (টি,আর,কাবিখা, থোক বরাদ্দ ও অন্যান্য)সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের এক তৃতীয়াংশ উন্নয়ন প্রকল্প বাসত্দবায়ন কমিটিরচেয়ারম্যানের দায়িত্ব সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যকে অর্পণ করিতে হইবে।

 

ইউনিয়ন পরিষদের পুলিশ ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বিষয়ক কাযাবর্লী

 

৪৮। (১) সরকার, সময়েসময়ে, চাহিদা মোতাবেক গ্রামীণ এলাকায় গ্রাম পুলিশ বাহিনীগঠন করিতে পারিবে এবং সরকার কতৃর্ক উক্ত গ্রাম পুলিশ বাহিনী নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, শৃংখলা এবং চাকুরির শর্তাবলী নিধারর্ণ করা হইবে।
(২) সরকার যেরূপ নির্দেশ প্রদান করিবে গ্রাম পুলিশ সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে।
(৩)ডেপুটি কমিশনারের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোন ইউনিয়ন বা তাহার অংশবিশেষে জননিরাপত্তা ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণেরপ্রয়োজন রহিয়াছে সেই ক্ষেত্রে উক্ত এলাকার প্রাপ্তবয়স্ক সক্ষম ব্যক্তিগণকেআদেশে উল্লিখিত পদ্ধতিতে গণপাহারায় নিয়োজিত করিতে পারিবে।
(৪) উপ-ধারা () এর অধীন আদেশ জারি করা হইলে ইউনিয়ন পরিষদ আদেশে উল্লিখিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবে।

 

 

 

নাগরিক সনদ প্রকাশ

 

৪৯। (১) এই আইনের অধীন গঠিত প্রতিটি পরিষদ, নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করিয়াবিভিন্ন প্রকারের নাগরিক সেবা প্রদানের বিবরণ, সেবা প্রদানের শর্তসমূহ এবংনির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সেবা প্রদান নিশ্চিত করিবার বিবরণ প্রকাশ করিবেযাহা "নাগরিক সনদ"(Citizen Charter) বলিয়া অভিহিত হইবে।
(২) সরকারপরিষদের জন্য আদর্শ নাগরিক সনদ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রণয়ন করিবে এবংপরিষদ আইন ও বিধি সাপেক্ষে, এ নির্দেশিকার প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধনকরিবার ক্ষমতা রাখিবে :
তবে শর্ত থাকে যে, এই ধরনের পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা হইলে, তাহা অবগতির জন্য সরকারকে অবহিত করিতে হইবে।
(৩) নাগরিক সনদ সময়ে সময়ে হাল নাগাদ করিতে হইবে।
(৪) নাগরিক সনদ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নে নিম্নবর্ণিত বিষয় অনত্দর্ভুক্ত থাকিবে, যথা :-
(ক) প্রতিটি সেবার নির্ভূল ও স্বচ্ছ বিবরণ;

(খ) সেবা প্রদানের মূল্য;
(গ) সেবা গ্রহণ ও দাবি করা সংক্রান্ত যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া;
(ঘ) সেবা প্রদানের নির্দিষ্ট সময়সীমা;
(ঙ) সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে নাগরিকদের দায়িত্ব;
(চ) সেবা প্রদানের নিশ্চয়তা;
(ছ) সেবা প্রদান সংক্রান্ত অভিযোগ নিষপত্তির প্রক্রিয়া; এবং
(জ) সনদে উল্লিখিত অঙ্গীকার লংঘনের ফলাফল।

 

উন্নততর তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও সুশাসন

 

৫০। (১) প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ সুশাসন নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে উন্নততর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করিবে।
(২) উপ-ধারা () এর উদ্দেশ্য পুরণকল্পে সরকার আর্থিক ও কারিগরি সাহায্যসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করিবে।
(৩)পরিষদ নাগরিক সনদে বর্ণিত আধুনিক সেবা সংক্রান্ত বিষয়সহ সরকারিভাবেপ্রদত্ত সকল সেবার বিবরণ উন্নততর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিকদের জ্ঞাতকরিবার ব্যবস্থা করিবে।

 

 

 

নবম অধ্যায়
পরিষদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা, সম্পদ ও তহবিল

 

 

 

পরিষদের সম্পত্তি অর্জন, দখলে রাখিবার ও নিষ্পত্তি করিবার ক্ষমতা

 

৫১। (১) প্রত্যেক পরিষদের সমপত্তি অর্জনের, দখলে রাখিবার ও নিষ্পত্তি করিবারএবং চুক্তিবদ্ধ হইবার ক্ষমতা থাকিবে; তবে, স্থাবর সমপত্তি অর্জন বানিষ্পত্তির ক্ষেত্রে পরিষদকে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।
(২) সরকার নিম্নবর্ণিত বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা :-
(ক) পরিষদের মালিকানাধীন বা উহার উপর ন্যস্ত সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, হস্তান্তর, নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন সংক্রান্ত;
(খ) পরিষদের জন্য প্রয়োজনীয় স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত।
(৩) পরিষদ প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে-

(ক)উহার মালিকানাধীন বা উহার উপর বা উহার তত্তাবধানে ন্যস্ত যে কোন সমপত্তিরব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিদর্শন ও উন্নয়ন করিতে পারিবে;
(খ) এই আইন বা বিধির উদ্দেশ্য পূরণকল্পে উক্ত সম্পত্তি কাজে লাগাইতে পারিবে; এবং

(গ) দান, বিক্রয়, বন্ধক, ইজারা, বিনিময়ের মাধ্যমে যে কোন সমপত্তি অর্জন বা হস্তান্তর করিতে পারিবে।
(৪)পরিষদ যথাযথ জরিপের মাধ্যমে উহার নিয়ন্ত্রণাধীন সকল সমপত্তির বিবরণাদিপ্রস্তুত করিয়া প্রতি বৎসর উহা হালনাগাদ করিবে এবং, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সম্পদের বিবরণী, মানচিত্র প্রস্তত করিয়া উহার একটি অনুলিপি নির্ধারিতকর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবে।
(৫) এই আইন বা নির্ধারিত পদ্ধতিউপেক্ষা বা লংঘন করিয়া যদি সম্পত্তি অর্জন, দখল ও নিষ্পত্তি করা হয়, তাহাহইলে, উহা অবৈধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ ওপ্রদানকারী ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্যহইবে এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য এই আইনের বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রাপ্যহইবেন।

 

পরিষদে সম্পদ হস্তান্তর

 

৫২।সরকার, কোন পরিষদ বা উহার স্থানীয় অধিক্ষেত্রের মধ্যে অবস্থিত কোন সরকারিসমপত্তি সংশ্লিষ্ট আইন বা বিধি-বিধান অনুযায়ী উক্ত পরিষদকে হস্তান্তর করিতেপারিবে এবং উক্তরূপ হস্তান্তরিত সমপত্তি ঐ পরিষদের উপর বর্তাইবে ও উহারনিয়ন্ত্রণাধীনে থাকিবে।

 

পরিষদের তহবিল

 

৫৩। (১) প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিষদের নামে একটি তহবিল থাকিবে।
(২) উপ-ধারা () এর অধীন গঠিত তহবিলে নিম্নবর্ণিত উৎসসমূহ থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথাঃ-
(ক) সরকার কতৃর্ক প্রদত্ত অনুদান ও মঞ্জুরী;
(খ) এই আইনের বিধান অনুযায়ী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সকল স্থানীয় উৎস হইতে আয়;
(গ) অন্য কোন পরিষদ কিংবা কোন স্থানীয় কতৃর্পক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান ও মঞ্জুরী;
(ঘ) সরকার কর্তৃপক্ষ মঞ্জুরীকৃত ঋণসমূহ (যদি থাকে);
(ঙ) পরিষদ কতৃর্ক, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, আদায়কৃত সকল কর, রেইট, টোল ও ফিস বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;
(চ)পরিষদের উপর ন্যস্ত এবং তৎকতৃর্ক নির্মিত বা নিয়ন্ত্রিত বা পরিচালিতবিদ্যালয়, হাসপাতাল, ঔষধালয়, ভবন, প্রতিষ্ঠান বা পূর্ত কায হইতে প্রাপ্তসকল আয় বা মুনাফা;
(ছ) কোন ট্রাষ্টের নিকট হইতে উপঢৌকন বা অনুদান হিসাবে প্রাপ্ত অর্থ;
(জ)এই আইনের বিধান অনুযায়ী প্রাপ্ত জরিমানা ও অর্থদণ্ডের অর্থ;

(ঝ) পরিষদ কতৃর্ক প্রাপ্ত অন্য সকল প্রকার অর্থ।
(ঞ) এই আইন কার্যকর হইবার কালে সংশ্লিষ্ট পরিষদের সম্পূর্ণ এখতিয়ারে উদ্বৃত্ত তহবিল।

 

পরিষদের ব্যয়

 

৫৪। (১) তহবিলের অর্থ নিম্নলিখিত খাতসমূহে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যয় করিতে হইবে, যথা :-
(ক) পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা প্রদান;
(খ) এই আইনের অধীন তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়;
(গ) এই আইন বা আপাততঃ বলবৎঅন্য কোন আইন বা অধ্যাদেশ দ্বারা ন্যস্ত পরিষদের দায়িত্ব সম্পাদন ও কর্তব্য পালনের জন্য ব্যয়;
(ঘ) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনক্রমে পরিষদ কর্তৃক ঘোষিত তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়;
(ঙ) সরকার কর্তৃক পরিষদের উপর ঘোষিত দায়যুক্ত ব্যয়।
(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিষদ যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবে পরিষদের তহবিল হইতে সেইরূপ অর্থ ব্যয় করিবার ক্ষমতা উহার থাকিবে।
(৩) তহবিলে জমা খাতে উদ্বৃত্ত অর্থ, সরকার সময়ে সময়ে যেরূপ নির্দেশ দিবে, সেইরূপ খাতে ব্যয় হইবে।
(৪) পরিষদের তহবিল পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হইবে।

 

পরিষদের তহবিল সংরক্ষণ বা বিনিয়োগ এবং বিশেষ তহবিল গঠন

 

৫৫। (১) পরিষদের তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোন সরকারি ট্রেজারীতে বা সরকারিট্রেজারীর কার্য পরিচালনাকারী কোন ব্যাংকে বা সরকার কর্তৃক সময়ে সময়েনির্ধারিত অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রাখিতে হইবে।
(২) পরিষদ নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহার তহবিলের যে কোন অংশ বিনিয়োগ করিতে পারিবে।
(৩)পরিষদ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে পৃথক তহবিল গঠনএবং সংরৰণ করিতে পারিবে, যাহা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালিত ওনিয়ন্ত্রিত হইবে।

 

 

 

দায়যুক্ত ব্যয়

 

৫৬। (১) পরিষদ তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয় নিম্নরূপ হইবে, যথাঃ -
(ক)পরিষদের চাকুরিতে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে (প্রেষণেনিয়োগপ্রাপ্ত কিংবা নিজস্ব) বেতন ও ভাতা হিসেবে প্রদেয় সমুদয় অর্থ;

(খ)সরকার কতৃর্ক নির্দেশিত পরিষদের নিবার্চন পরিচালনা, হিসাব নিরীক্ষা বাসময়ে সময়ে সরকারের নির্দেশক্রমে অন্য কোন বিষয়ের জন্য পরিষদ কতৃর্ক প্রদেয়অর্থ;
(গ) কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কতৃর্ক পরিষদের বিরুদ্ধে প্রদত্ত কোন রায়, ডিক্রী বা রোয়েদাদ কাযর্কর করিবার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ; এবং
(ঘ) সরকার কতৃর্ক দায়যুক্ত বলিয়া ঘোষিত অন্য যে কোন ব্যয়।
(২)পরিষদের তহবিলের উপর দায়যুক্ত কোন ব্যয়ের খাতে যদি কোন অর্থ অপরিশোধিতথাকে, তাহা হইলে যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের হেফাজতে উক্ত তহবিল থাকিবেসেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে সরকার, আদেশ দ্বারা, উক্ত তহবিল হইতে যতদূরসম্ভব উক্ত অর্থ পরিশোধ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে।

 

 

 

দশম অধ্যায়
বাজেট ও হিসাব নিরীক্ষা

 

 

 

বাজেট

 

৫৭।প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ প্রতি অর্থ বৎসর শুরু হইবার অন্যূন ৬০ (ষাট) দিনপূবে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ওয়ার্ড সভা হইতে প্রাপ্ত অগ্রাধিকারের ভিত্তিতেউক্ত অর্থ বৎসরের সম্ভাব্য আয় ও ব্যয় বিবরণী সম্বলিত একটি বাজেট প্রণয়নকরিবে।
(২) ইউনিয়ন পরিষদ সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটি এবং স্থানীয়জনসাধারণের উপস্থিতিতে প্রকাশ্য বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠান করিয়া বাজেট পেশকরিবে এবং পরিষদের পরবর্তী সভায় পাসকৃত বাজেটের অনুলিপি উপজেলা নিবার্হীঅফিসারের নিকট প্রেরণ করিবে।
(৩) কোন ইউনিয়ন পরিষদ অর্থ বৎসর শুরুহইবার পূবে উক্ত বাজেট প্রণয়ন করিতে ব্যর্থ হইলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নিবার্হীঅফিসার সম্ভাব্য আয় ব্যয়ের একটি বিবরণী প্রস্তুত ও প্রত্যয়ন করিবে এবংএইরূপ প্রত্যয়নকৃত বিবরণী ইউনিয়ন পরিষদের অনুমোদিত বাজেট বলিয়া গণ্য হইবে।
(৪)উপজেলা নিবার্হী অফিসার উপ-ধারা () এর অধীন প্রণীত বাজেটের অনুলিপিপ্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে বাজেটে কোন ত্রুটি থাকিলে উহা সংশোধনকরিয়া পরিষদকে অবহিত করিবে এবং অনুরূপভাবে প্রণীত বাজেট ইউনিয়ন পরিষদেরবাজেট বলিয়া গণ্য হইবে।

(৫) কোন অর্থ বৎসর শেষ হইবার পূবে যে কোনসময় উক্ত বৎসরের জন্য প্রয়োজন হইলে ইউনিয়ন পরিষদ সংশোধিত বাজেট প্রণয়নকরিয়া উহার অনুলিপি উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট প্রেরণ করিবে এবং উক্তসংশোধিত বাজেটের ক্ষেত্রেও উপ ধারা () এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
(৬)এই আইন অনুযায়ী গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ দায়িত্বভার গ্রহণের পর অর্থ বৎসরেরঅবশিষ্ট সময়ের জন্য বাজেট প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং উক্ত বাজেটের ক্ষেত্রেওএই ধারার বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।

 

হিসাব

 

৫৮। ইউনিয়ন পরিষদের আয় ও ব্যয়ের হিসাব নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফরমে সংরক্ষণ করিতে হইবে।
(২)প্রত্যেক অর্থ বৎসরের শেষে ইউনিয়ন পরিষদ উক্ত অর্থ বৎসরের আয় ও ব্যয়েরহিসাব প্রস্তুত করিবে এবং ইউনিয়ন পরিষদের সকল স্থায়ী কমিটি ও জনসাধারণেরউপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত বাজেট অধিবেশনে এই হিসাব পেশ করিবে।
(৩) ইউনিয়নপরিষদ পরবর্তী অর্থ বৎসরের ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে উপ-ধারা () অনুযায়ীপরিষদের আয়-ব্যয়ের চূড়ান্ত হিসাব এর বিবরণ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকটপ্রেরণ করিবে; উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমন্বিত প্রতিবেদন সরকার কর্তৃকনির্ধারিত ছকে ডেপুটি কমিশনারের নিকট প্রেরণ করিবে এবং ডেপুটি কমিশনারসমন্বিত প্রতিবেদন নির্ধারিত ছকে সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে।

 

নিরীক্ষক নিয়োগ

 

৫৯।ইউনিয়ন পরিষদের তহবিলের হিসাবসমূহ সরকার যেরূপ বিহিত করিবে, সেইরূপ সময়ে ওস্থানে এবং নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত কোন নিরীক্ষক কতৃর্ক পরীক্ষিত ওনিরীক্ষিত হইবে।
(২) এই ধারা অনুযায়ী নিযুক্ত নিরীক্ষক দণ্ড বিধি, ১৮৬০ (Penal Code, 1860) এর ২১ ধারা মতে জনসেবক (Public Servant) বলিয়া গণ্য হইবেন।
(৩)নিরীক্ষক তহবিলের যে সকল হিসাব উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ জানাইবেন, পরিষদেরচেয়ারম্যান, ক্ষেত্রমত, সেই সকল হিসাব নিরীক্ষকের নিকট উপস্থাপন করিবেন বাকরাইবার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।

 

 

 

নিরীক্ষকগণের ক্ষমতা

 

৬০। (১) এই আইন অনুযায়ী নিরীক্ষার প্রয়োজনে কোন নিরী্ক্ষক-
(ক)নিরীক্ষা কার্য যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য তিনি যেরূপ আবশ্যক বলিয়া বিবেচনাকরিবেন সেইরূপ কোন তথ্য তাহার সম্মুখে উপস্থাপন কিংবা লিখিতভাবে সরবরাহকরিবার জন্য চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করিতে পারিবেন;
(খ) যে ব্যক্তিউক্তরূপ কোন তথ্যাদির জন্য কৈফিয়ত দিতে দায়ী, অথবা যে ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণেউক্তরূপ কোন দলিল বা তথ্য থাকে, অথবা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যগণেরসহিত, দ্বারা বা পক্ষে কোন অংশ বা স্বার্থ, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে, এবংতাহার স্বনামেই হউক বা তাহার অংশীদারের নামেই হউক, থাকে, সেইরূপ কোনব্যক্তিকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হইবার জন্য লিখিত অনুরোধ করিতে পারিবেন; এবং
(গ) উক্তরূপ অবস্থার প্রেক্ষিতে তাহার সম্মুখে উপস্থাপিত কোনব্যক্তিকে উক্তরূপ কোন তথ্য সমপর্কে একটি ঘোষণা প্রস্তুত করিয়া উহাস্বাক্ষর করিবার জন্য, অথবা কোন প্রশ্নের উত্তর দিবার জন্য অথবা কোন বিবৃতিপ্রস্তুত করিয়া উহা দাখিল করিবার জন্য অনুরোধ করিতে পারিবেন;
(ঘ) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ নিরীক্ষা সমাপনান্তে প্রতিবেদন দাখিল করিবেন, যাহাতে অন্যান্য বিষয়ের সহিত উল্লেখ থাকিবে-
(অ) তহবিল তসরুফের ঘটনা;
(আ) পরিষদ তহবিলের ক্ষতি, অপচয়, অথবা অপপ্রয়োগের ঘটনা;
(ই) হিসাব রক্ষণের ক্ষেত্রে অন্যান্য অনিয়ম;
(ঈ)নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষের মতে যে সকল ব্যক্তি উপ-দফা (), (আ) () এ বর্ণিতঅনিয়মের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী তাহাদের নাম প্রতিবেদনে উল্লেখথাকিতে হইবে;
(ঙ) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষের, নিরীক্ষা প্রতিবেদনের কপি পরিষদকে প্রদান করিয়া, তাহার অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে;
(চ)নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চিহ্নিত অনিয়ম সংক্রান্ত সকল বিষয়ে, পরিষদদ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে এবং গৃহীত ব্যবস্থা নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ, সরকারকে অবহিত করিবে।
(২) যদি কোন ব্যক্তি উপ-ধারা () অনুযায়ীনিরীক্ষক কর্তৃক প্রদত্ত অনুরোধ পালন করিতে অবহেলা করে বা অস্বীকৃতি জানায়, তাহা হইলে, নিরীক্ষক, যে কোন সময়, উক্ত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহীঅফিসারকে অবহিত করিতে পারিবেন; উপজেলা নির্বাহী অফিসার, যে ব্যক্তিনিরীক্ষক কর্তৃক প্রদত্ত অনুরোধ পালন করিতে অবহেলা করিতেছে বা অস্বীকৃতিজানাইয়াছে সেই ব্যক্তিকে যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেইরূপ নির্দেশ প্রদানকরিতে পারিবেন এবং উক্ত নির্দেশ ঐ ব্যক্তির জন্যে অবশ্যই পালনীয় হইবে।

 

নিরীক্ষা সংক্রান্ত বিধি প্রণয়ন

 

৬১। সরকার নিরীক্ষা সংক্রান্ত বিধি প্রণয়ন করিবে, যাহাতে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা :-

(ক) নিরীক্ষা প্রতিবেদন সংক্রান্ত সময়সীমা;
(খ) হিসাব পত্রের গুরুত্বপূর্ণ অসংগতি বা অনিয়ম;
(গ) অর্থ বা সম্পত্তির কোনরূপ ক্ষতি বা অপচয়;
(ঘ) নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর ব্যবস্থা গ্রহণের সময়সীমাসহ অন্যান্য করণীয় বিষয়াবলী;
(ঙ) অবৈধভাবে অর্থ প্রদানকারী বা অর্থ প্রদানকারী কতৃর্পক্ষের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট সুপারিশ;
(চ) হিসাব পত্রের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা;
(ছ) হিসাব পত্রের বিশেষ নিরীক্ষা।

 

 

 

একাদশ অধ্যায়
পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী

 

 

 

ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী

 

৬২।প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের একজন সচিব, একজন হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটারঅপারেটর থাকিবেন, যাহারা সরকার বা সরকার কতৃর্ক নির্ধারিত কোন কতৃর্পক্ষেরমাধ্যমে নিযুক্ত হইবেন।
(২) সরকার, ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা ওকর্মচারী নিয়োগ, চাকুরির শর্ত নির্ধারণ, বেতন-ভাতা প্রদান, শৃংখলা ওশাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, অবসর প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করিবে।
(৩)পরিষদ, সরকারের পুবার্নুমোদনক্রমে, পরিষদের অন্যান্য সকল কর্মকর্তা ওকর্মচারীর ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালন সম্পকির্ত বিষয়ে প্রবিধি প্রণয়ন করিবে।
(৪)সরকারের পূবার্নুমোদনক্রমে, ইউনিয়ন পরিষদ, প্রয়োজনবোধে, অতিরিক্ত জনবলনিয়োগ করিতে পারিবে, যাহাদের বেতন, ভাতা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্বতহবিল হইতে পরিশোধ করিতে হইবে।

 

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিষদে ন্যস্তকরণে সরকারের ক্ষম

 

৬৩। (১) নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে পরিষদের সাধারণ বা বিশেষ কার্য সম্পাদনেরলক্ষ্যে সরকার তৃতীয় তফসিলে বর্ণিত সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী এবংতাহাদের কার্যাবলী নির্ধারিত সময়ের জন্য পরিষদে হস্তান্তর করিতে পারিবে, উক্তরূপে হস্তান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ সংশ্লিষ্ট পরিষদেরব্যবস্থাপনায় দায়িত্ব পালন করিবেন।

(২) উপ-ধারা () এর অধীনহস্তান্তরিত কোন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরম্নদ্ধে শৃঙ্খলামূলকব্যবস্থা গ্রহণ সমীচীন মনে করিলে পরিষদ এ বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান করিয়াসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিয়োগকারী কর্তৃপৰের নিকট প্রতিবেদনপ্রেরণ করিবে।
(৩) উপ-ধারা () এর অধীন পরিষদে হস্তান্তরিতকর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ তাহাদের উপর অর্পিত সাধারণ দায়িত্ব ছাড়াও পরিষদকর্তৃক, সময়ে সময়ে, নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৪)উপ-ধারা () এর অধীন হস্তান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ পরিষদের নিকট এইআইন বা বিধি অনুযায়ী হস্তান্তরিত নহে উক্তরূপ সরকারি প্রকল্প, স্কীম, পরিকল্পনা ইত্যাদি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করিবেন ।
(৫)সংশ্লিষ্ট পরিষদ কর্তৃক ব্যয়ভার ক্ষমতা অর্জন না করা পর্যন্ত উপ-ধারা ()এর অধীন হস্তান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্যআর্থিক সুবিধা সরকার কর্তৃক প্রদেয় হইবে।

 

পরিষদের নিবার্চিত প্রতিনিধি ও কর্মকর্তা বা কমর্চারীগণের সম্পর্ক

 

৬৪। (১) পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মকর্তা বা কমর্চারীগণের আইনগত অধিকার ওপেশাগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে সরকার নিবার্চিত জনপ্রতিনিধি এবংপরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন বা পরিষদে ন্যস্তকৃত কর্মকর্তা বা কমর্চারীগণেরমধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ বিষয়ক একটি আচরণ বিধি (Code of Conduct) প্রণয়নকরিবে।
(২) পরিষদের যে কোন সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাদের মতামত সভার কাযবিবরণীতে উল্লেখ থাকিতে হইবে।
(৩)নিবার্চিত কোন জনপ্রতিনিধি কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কোন কায সম্পাদনেরজন্য মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করিলেও সংশ্লিষ্ট কাজটি বাস্তবায়নের পূবেলিখিতভাবে নির্দেশনা দিতে হইবে।

 

 

 

দ্বাদশ অধ্যায়
পরিষদের করারোপ

 

 

 

পরিষদ কতৃর্ক করারোপ

 

৬৫। (১) ইউনিয়ন পরিষদ চতুর্থ তফসিলে উল্লিখিত সকল অথবা যে কোন কর, রেইট, টোল, ফিস ইত্যাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে আরোপ করিতে পারিবে।
(২)পরিষদ কতৃর্ক আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল, ফিস ইত্যাদি বিধি দ্বারানির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপিত হইবে এবং সরকার ভিন্নরূপ নির্দেশ না দিলেউক্ত আরোপের বিষয়টি আরোপের পূবেই প্রকাশ করিতে হইবে।
(৩) কোন কর, রেইট, টোল ও ফিস আরোপের বা উহার পরিবর্তনের কোন প্রস্তাব অনুমোদিত হইলেঅনুমোদনকারী কতৃর্পক্ষ কতৃর্ক যে তারিখ হইতে উহা কাযর্কর হইবে বলিয়ানির্দেশ দিবে সেই তারিখ হইতে উহা কাযর্কর হইবে।

 

আদর্শ কর তফসিল

 

৬৬।সরকার ইউনিয়ন পরিষদের জন্য আদর্শ কর তফসিল প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং অনুরূপতফসিল প্রণীত হইলে কর, রেইট, টোল কিংবা ফিস ইত্যাদি আরোপ উক্ত তফসিলদ্বারা পরিচালিত হইবে।

 

কর সংক্রান্ত দায়

 

৬৭। (১) কোন ব্যক্তি বা জিনিসপত্রের উপর কর, রেইট, টোল কিংবা ফিস আরোপ করাযাইবে কিনা উহা নির্ধারণের প্রয়োজনে পরিষদ নোটিশের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তিকেপ্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করিতে বা এতদ্সংক্রান্ত দলিলপত্র, হিসাব বই বাজিনিসপত্র দাখিল করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে।
(২) এতদুদ্দেশ্যেক্ষমতাপ্রাপ্ত পরিষদের কোন সদস্য বা কর্মচারী যথাযথ নোটিশ প্রদানের পর কোনইমারত বা অঙ্গন কর আরোপযোগ্য কিনা উহা যাচাই করিবার জন্য উক্ত ইমারত বাঅঙ্গনে প্রবেশ করিতে পারিবেন।

 

কর সংগ্রহ ও আদায়, ইত্যাদি

 

৬৮। (১) এই আইনে ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে, এই আইনের অধীন আরোপযোগ্য সকল কর, রেইট, টোল বা ফিস নির্ধারিত ব্যক্তি কতৃর্ক নির্ধারিত পদ্ধতিতে আদায় করিতেহইবে।
(২) এই আইনের অধীন পরিষদ কতৃর্ক দাবীযোগ্য সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য অর্থ সরকারি দাবি হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে।
(৩)এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত পরিষদের যে কোন সদস্য বা কর্মকর্তা নির্ধারিতপদ্ধতিতে বকেয়া কোন কর, রেইট, টোল বা ফিস আদায়ের জন্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত ওনিস্পত্তি করিতে পারিবে।
(৪) উপ-ধারা () এর বিধান সত্ত্বেও, সরকার কোন পরিষদকে এই আইনের অধীন প্রাপ্য সকল অনাদায়ী কর, রেইট, টোল, ফিসবা অন্যান্য বকেয়া অর্থ আদায় করিবার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরমালিকানাধীন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং বিক্রয় করিবার ক্ষমতাপ্রদান করিতে পারিবে।
(৫) উপ-ধারা () এর অধীন প্রদত্ত ক্ষমতা কোন্কর্মকর্তা বা কোন্ শ্রেণীর কর্মকর্তা কি প্রকারে প্রয়োগ করিবেন তাহা সরকারবিধি দ্বারা নির্ধারণ করিবে।

 

কর নির্ধারণ, মূল্যায়ন ইত্যাদির বিরুদ্ধে আপত্তি

 

৬৯।এই আইনের অধীন ধার্য কোন কর, রেইট, টোল বা ফিস বা এতদ্সংক্রান্ত কোনসম্পত্তির মূল্যায়ন অথবা কোন ব্যক্তি কতৃর্ক উহা প্রদানের দায়িত্ব সম্পর্কেকোন আপত্তি লিখিত দরখাস্তের মাধ্যমে নির্ধারিত কতৃর্পক্ষের নিকট এবংনির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে উত্থাপন করিতে হইবে।

 

কর বিধি

 

৭০। (১) পরিষদ কতৃর্ক ধাযর্কৃত সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য দাবি বিধিদ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ধার্য, আরোপ, ইত্যাদি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করাযাইবে।
(২) এই ধারায় উল্লিখিত বিষয় সম্পর্কিত বিধিতে অন্যান্যবিষয়ের মধ্যে কর দাতাদের করণীয় এবং কর ধার্যকারী ও আদায়কারী কর্মকর্তা ওঅন্যান্য কতৃর্পক্ষের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে বিধান থাকিবে।

 

 

 

ত্রয়োদশ অধ্যায়
সরকার ও কমিশনের ক্ষমতা

 

 

 

পরিষদের রেকডর্, ইত্যাদি পরিদর্শনের ক্ষমতা

 

৭১।(১) সরকার বা সরকার কতৃর্ক ক্ষমতা প্রাপ্ত যে কোন কর্মকর্তা পরিষদকে নিম্নরূপ নির্দেশ দিতে পারিবে, যথাঃ
(ক) পরিষদের হেফাজতে বা নিয়ন্ত্রণাধীন যে কোন রেকর্ড, রেজিষ্টার বা অন্যান্য নথিপত্র উপস্থাপনঃ
তবেশর্ত থাকে যে, প্রয়োজনে এই সকল রেকর্ড, রেজিষ্টার বা নথিপত্রের ফটোকপিরাখিয়া মূল কপি ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পরিষদে ফেরত দিতে হইবে;
(খ) যে কোন রিটার্ন, প্ল্যান, প্রাক্কলন, আয়-ব্যয় বিবরণী ইত্যাদি দাখিল;
(গ) পরিষদ সংশ্লিষ্ট যে কোন তথ্য বা প্রতিবেদন সরবরাহ।
(২) পরিষদের আয়ের উৎস হিসাবে কোন দাবি পরিত্যাগ বা কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করিয়া দেওয়ার পূবে সরকারের পূবার্নুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।
(৩)ডেপুটি কমিশনার বা তৎকতৃর্ক ক্ষমতা প্রাপ্ত যে কোন কর্মকর্তা যে কোন পরিষদএবং পরিষদের নথিপত্র, স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি, সমাপ্ত ও চলমান উন্নয়নপ্রকল্পসহ যে কোন নিমার্ণ কাজ পরিদর্শন করিতে পারিবেন।
(৪) পরিষদেরচেয়ারম্যান, সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ উপ-ধারা () অনুযায়ীনিযুক্ত কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করিতে বাধ্য থাকিবেন।
(৫) সরকার, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নির্দিষ্ট সময় পর পর প্রত্যেক পরিষদের প্রশাসনিক কাযর্ক্রম সংক্রান্ত পারফরমেন্স অডিট সম্পন্ন করিবে।

 

কারিগরি তদারকি ও পরিদর্শন

 

৭২।সরকার কতৃর্ক নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং তৎকতৃর্কমনোনীত কারিগরি কর্মকর্তাগণ পরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন উক্ত বিভাগেরউন্নয়ন প্রকল্পসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ড ও নথিপত্র পরিদর্শন করিতেপারিবেন।

 

সরকার বা কমিশনের দিক নির্দেশনা প্রদান এবং তদন্ত করিবার ক্ষমতা

 

৭৩। (১) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, কমিশনের মতামত গ্রহণ করিয়া, সরকারের নীতির সাথে সঙ্গতি রাখিয়া যে কোন পরিষদকে আর্থিক ব্যবস্থাপনা, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যবস্থাপনা, বিভিন্ন প্রকার প্রকল্প প্রণয়ন ওপ্রকল্পের উপকারভোগী নিবার্চন, পরিষদ ও ওয়ার্ড সভার কাযর্ক্রম পরিচালনাইত্যাদি বিষয়ে দিক নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে, এবং পরিষদ উক্তরূপ দিকনির্দেশনা বাধ্যতামুলকভাবে অনুসরণ করিবে।
(২) কোন প্রকল্পবাস্তবায়ন বা কোনরূপ আর্থিক অনিয়ম বা পরিষদের অন্য যে কোন অনিয়মের বিষয়েপ্রাপ্ত অভিযোগ সরকার বা সরকার কতৃর্ক নিযুক্ত এক বা একাধিক কর্মকর্তাতদন্ত করিতে পারিবেন এবং সংশ্লিষ্ট পরিষদ উক্ত তদন্ত কাজ পরিচালনায়সহযোগিতা করিবেন।
(৩) উপ-ধারা () অনুযায়ী তদন্ত সম্পাদনের পরতদন্তের ফলাফলের উপর ভিত্তি করিয়া সরকার, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, দায়ীব্যক্তি, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বা পরিষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করিতেপারিবে।

 

পরিষদ, পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ

 

৭৪। (১) যদি সরকারের নিকট এই মর্মে প্রতীয়মান হয় যে, কোন পরিষদ বা পরিষদেরচেয়ারম্যান, সদস্য ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এই আইন বা সরকারের অন্যকোন আদেশ দ্বারা নির্ধারিত দায়িত্ব সম্পাদনে ব্যর্থ হইয়াছে, তাহা হইলে, সরকার অথবা সরকার কতৃর্ক নির্ধারিত কতৃর্পক্ষ লিখিত আদেশ দ্বারা নির্ধারিতসময়ের মধ্যে উক্তরূপ দায়িত্ব পালনের জন্য পরিষদ বা চেয়ারম্যানকে নির্দেশদিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা () অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেদায়িত্ব সম্পাদনে বা আদেশ পালনে ব্যর্থ হইলে সরকার সংশ্লিষ্টদের যুক্তিসংগতসুযোগ প্রদান করিয়া, কারণ দর্শাইবেন এবং উক্তরূপ দায়িত্ব সম্পাদন বা আদেশপালনের জন্য যে কোন কর্মকর্তা বা কতৃর্পক্ষকে দায়িত্ব পালনার্থে নিয়োগকরিবেন এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট আর্থিক সংশ্লেষ, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পরিষদেরতহবিল বা সংশ্লিষ্টদের ব্যক্তিগত তহবিল হইতে বহনের নির্দেশ প্রদান করিবেন।

 

পরিষদের সিদ্ধান্ত, কাযবিবরণী, ইত্যাদি বাতিল বা স্থগিতক

 

৭৫।(১)সরকার স্বয়ং অথবা পরিষদের চেয়ারম্যান বা সদস্য বা দায়িত্বপ্রাপ্তকর্মকর্তা বা অন্য কোন ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিষদের যে কোনকাযবিবরণী বা সিদ্ধান্ত বাতিল বা স্থগিত করিতে পারিবে, যদি উক্তরূপসিদ্ধান্ত বা কাযবিবরণী-
(ক) আইনসংগতভাবে গৃহীত না হইয়া থাকে;
(খ) এই আইন বা অন্য কোন আইনের পরিপন্থী বা অপব্যবহারমূলক হইয়া থাকে;
(গ)মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য, জননিরাপত্তা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি হুমকিরসম্মুখীন করে অথবা দাঙ্গা বা ঝগড়া-বিবাদের সৃষ্টির সম্ভাবনা সৃষ্টি করে; অথবা
(ঘ) সরকার কতৃর্ক জারিকৃত দিকনির্দেশনামূলক সিদ্ধান্তের পরিপন্থী হয়।
(২)উপ-ধারা () অনুযায়ী কোন সিদ্ধান্ত বা কাযবিবরণী বাতিল বা স্থগিত করিবারপূর্বে সরকার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পরিষদকে যথাযথ শুনানির সুযোগ দিয়া উক্তশুনানির ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট পরিষদের কার্যবিবরণী বা সিদ্ধান্ত বাতিল বাসংশোধন বা চূড়ান্ত করিবে।
(৩) উপ-ধারা () অনুযায়ী পরিষদের কোনসিদ্ধান্ত বা কাযবিবরণী বাতিল বা সংশোধন করা প্রয়োজন মনে করিলে, উপ-ধারা (২) অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূব পযর্ন্ত সরকার সাময়িকভাবে উক্তকাযবিবরণীর সিদ্ধান্ত স্থগিত করিতে পারিবে।

 

পরিষদের বার্ষিক, আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রতিবেদন

 

৭৬।(১)পরিষদ প্রত্যেক বৎসর সরকার কতৃর্ক নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে পরিষদেরবার্ষিক, আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রতিবেদন প্রস্তত করিবে এবং পরবর্তী বৎসরের৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উহা সরকার এবং কমিশনের নিকট প্রেরণ করিবে।
(২)উপ-ধারা () এ প্রদত্ত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করিতে নাপারিলে সরকার পরিষদের অনুকূলে অনুদান প্রদান স্থগিত রাখিতে পারিবে।
(৩)পরিষদের সচিব চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে উক্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতকরিবেন এবং উহা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পরিষদের সভায় উপস্থাপন করিবেন।
(৪)ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক প্রতিবেদন উপজেলা নিবার্হী অফিসারের নিকট প্রেরণকরিতে হইবে এবং উপজেলা নিবার্হী অফিসার সমন্বিত প্রতিবেদন সরকার কতৃর্কনির্ধারিত ছকে ডেপুটি কমিশনারের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং ডেপুটি কমিশনারসমন্বিত প্রতিবেদন নির্ধারিত ছকে সরকার ও কমিশনের নিকট প্রেরণ করিবেন।
(৫) সরকার উপ-ধারা () অনুসারে প্রাপ্ত সমন্বিত বার্ষিক প্রতিবেদন সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে উপস্থাপন করিবে।

 

পরিষদ বাতিল ও পুনঃনিবার্চন

 

৭৭। (১) সরকার নিম্নলিখিত কারণে যথাযথ তদন্তপূর্বক সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা পরিষদ বাতিল করিতে পারিবে, যথা
(ক) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বাজেট পাশ করিতে ব্যর্থ হইলে; অথবা
(খ) পরিষদের ৭৫% (শতকরা ৭৫ ভাগ) নির্বাচিত সদস্য পদত্যাগ করিলে; অথবা
(গ) পরিষদের ৭৫% (শতকরা ৭৫ ভাগ) নির্বাচিত সদস্য এই আইনের অধীন অযোগ্য হওয়ার কারণে অপসারিত হইলে ; অথবা
(ঘ) পরিষদ ক্ষমতার অপব্যবহার করিলে; অথবা
(ঙ)সরকারের বিবেচনায় কোন পরিষদ এই আইন ও অন্যান্য আইন বা বিধি এবং সরকারেরসার্কুলার, পরিপত্র ইত্যাদির মাধ্যমে অর্পিত দায়িত্ব পালনে ধারাবাহিকভাবেব্যর্থ হইলে ঃ
তবে শর্ত থাকে যে, পরিষদ বাতিল করিবার পূর্বে পরিষদকে যুক্তিসংগতভাবে শুনানীর সুযোগ দিতে হইবে।
(২)উপ-ধারা () অনুযায়ী পরিষদ বাতিলের আদেশ প্রজ্ঞাপন জারীর তারিখ হইতেকার্যকর হইবে এবং গেজেট প্রজ্ঞাপনের কপি নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করিতেহইবে।
(৩) উপ-ধারা () অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারীর তারিখ হইতে পরিষদেরচেয়ারম্যান ও সকল সদস্যের আসন শূন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত আসনশূন্য হইবার অনূ্যন ১৮০ (একশত আশি) দিনের মধ্যে পুনঃনির্বাচন অনুষ্ঠানেরমাধ্যমে পরিষদ পুনর্গঠিত হইবে।
(৪) পুনর্গঠিত পরিষদের সদস্যগণ পরিষদের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবেন এবং দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৫)পরিষদ বাতিল হইবার এবং পুনর্গঠিত হইবার অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে সরকারকতৃর্ক নিযুক্ত একটি প্রশাসনিক কমিটি পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনাকরিবে।
(৬) পরিষদের সকল সম্পদ ও দায় উপ-ধারা () অনুযায়ী পুনর্গঠিতপরিষদের উপর দায়িত্ব গ্রহণের পর হইতে পরিষদের অবশিষ্ট মেয়াদকাল পর্যন্ত এবংউপ-ধারা () অনুযায়ী গঠিত প্রশাসনিক কমিটির উপর দায়িত্ব গ্রহণের তারিখহইতে পরিষদ পুনর্গঠন হওয়া পর্যন্ত বর্তাইবে।

 

 

 

চতুর্দশ অধ্যায়
তথ্য প্রাপ্তির অধিকার

 

 

 

তথ্য প্রাপ্তির অধিকার

 

৭৮। (১) প্রচলিত আইনের বিধান সাপেৰে, বাংলাদেশের যে কোন নাগরিকের পরিষদসংক্রান্ত যে কোন তথ্য, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রাপ্তির অধিকার থাকিবে।
(২)উপ-ধারা () এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার জনস্বার্থ এবং স্থানীয়প্রশাসনিক নিরাপত্তার স্বার্থে গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোন রেকর্ড বানথিপত্র ক্লাসিফাইড রেকর্ড হিসাবে বিশেষ শ্রেণীভুক্ত করিতে পারিবে।
(৩)কোন ব্যক্তির উক্তরূপ বিশেষ শ্রেণীভুক্ত রেকর্ড ও নথিপত্রের তথ্য জানিবারঅধিকার থাকিবে না এবং পরিষদ এই সংক্রান্ত যে কোন আবেদন অগ্রাহ্য করিতেপারিবে।
(৪) সরকার, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এলাকারজনসাধারণের নিকট সরবরাহযোগ্য তথ্যের একটি তালিকা প্রকাশের জন্য পরিষদকেআদেশ দিতে পারিবে।

 

তথ্য সরবরাহের পদ্ধতি

 

৭৯। (১) কোন ব্যক্তির কোন তথ্যের প্রয়োজন হইলে তাহাকে নির্ধারিত ফরমে এবংনির্ধারিত ফি দিয়া পরিষদের চেয়ারম্যানের বরাবরে লিখিত আবেদন করিতে হইবে; উক্ত দরখাস্ত নামঞ্জুর বা অন্যরূপ নিষ্পত্তি না হইলে সচিব নির্দিষ্ট সময়েরমধ্যে চাহিত তথ্যাদি সরবরাহ করিবেন।
(২) কোন ব্যক্তির আবেদন নামঞ্জুর হইলে উক্ত নামঞ্জুরের কারণ তাহাকে লিখিতভাবে জানাইতে হইবে।

 

তথ্য প্রদানের বাধ্যবাধকতা

 

৮০। (১) পরিষদের সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী এইঅধ্যায়ে বর্ণিত নোটিফাইড রেকর্ডপত্র ব্যতীত অন্যান্য তথ্যাদি নির্ধারিতপদ্ধতিতে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
(২)যদি সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারী নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যেউক্তরূপ তথ্যাদি সরবরাহ না করেন, তাহা হইলে প্রতিদিনের বিলম্বের জন্য ৫০/- (পঞ্চাশ) টাকা হারে জরিমানা দিতে হইবে এবং উক্ত জরিমানার অর্থ পরিষদেরতহবিলে জমা হইবে।
(৩) পরিষদের সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাকর্মচারী যদি তথ্য সরবরাহ না করেন, অথবা যদি তাহার জানা সত্ত্বেও অসত্য বাভুল তথ্য সরবরাহ করেন, তাহা হইলে তিনি অন্যূন ১,০০০/- (এক হাজার) টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

 

সরল বিশ্বাসে কৃত কর্ম

 

৮১।এই অধ্যায়ে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি সচিব বা দায়িত্বপ্রাপ্তকর্মকর্তা বা কর্মচারী এই মর্মে নিশ্চিত হন যে, চাহিত তথ্যাদি সরবরাহকরিবার জন্য সংশ্লিষ্ট নথি বা রেকর্ডপত্র খুঁজিয়া পাওয়া যাইতেছে না অথবা এইধরনের তথ্যাদি পরিষদে সংরক্ষিত নাই, তাহা হইলে, উক্ত বিষয়টি আবেদনকারীকেযথাশীঘ্র্র সম্ভব জানাইয়া দিতে হইবে এবং এই ধারায় বর্ণিত কারণে তথ্য সরবরাহনা করিতে পারিলে সচিব বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনশাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না।

 

 

 

পঞ্চদশ অধ্যায়
টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, ইত্যাদি নিবন্ধিকরণ

 

 

 

টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার ইত্যাদি নিবন্ধিকরণ

 

৮২। (১) এই আইন কাযর্কর হওয়ার তারিখে বা তৎপরবর্তীতে পরিষদ এলাকায় পরিষদেরনিবন্ধন ব্যতীত বেসরকারিভাবে বা ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত টিউটোরিয়াল স্কুলবা কোচিং সেন্টার চালু করা যাইবে না; উক্তরূপ নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিতপদ্ধতিতে পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন করিতে হইবে এবং উক্তরূপ আবেদনপ্রাপ্তির পর পরিষদ প্রয়োজনীয় তদন্ত করিয়া সন্তোষজনক বিবেচিত হইলে পরিষদসভার অনুমোদক্রমে নিবন্ধনের অনুমতি প্রদান করিবে ।
(২) এই আইন জারিহওয়ার সময় যে সকল টিউটোরিয়াল স্কুল বা কোচিং সেন্টার চালু থাকিবে সে সকলপ্রতিষ্ঠান সরকার কতৃর্ক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতেনিবন্ধনের জন্য আবেদন করিলে পরিষদ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন করিবেঃ
তবেশর্ত থাকে যে, কোন সরকারি সম্পত্তিতে সরকারের পূবার্নুমোদন ব্যতীত এইধরনের টিউটোরিয়াল স্কুল বা কোচিং সেন্টার চালু করিবার আবেদন করিলে উহানিবন্ধন করা যাইবে নাঃ
তবে আরও শর্ত থাকে যে, সরকারি সম্পত্তিতে পূবহইতে চালুকৃত প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারি সম্পত্তি ব্যবহারসংক্রান্ত অনুমতি না পাইলে উক্তরূপ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নির্দিষ্ট সময়েরপর বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) উপ-ধারা () () এর অধীন নিবন্ধিতপ্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন পাঁচ বৎসর অন্তর অন্তর সরকার কতৃর্কনির্ধারিত ফি দিয়া নবায়ন করিতে হইবে।

 

প্রাইভেট হাসপাতাল, ইত্যাদি নিবন্ধিকরণ

 

৮৩। (১) এই আইন কাযর্কর হওয়ার তারিখে বা তৎপরবর্তীতে পরিষদের এখতিয়ারাধীনএলাকায় পরিষদে যথানিয়মে নিবন্ধন ব্যতীত কোন প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করা যাইবে না।
(২)এই আইন জারি হওয়ার সময় যে সকল প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যালইনস্টিটিউট চালু থাকিবে সে সকল প্রতিষ্ঠান সরকার কতৃর্ক নিদিষ্ট সময়েরমধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করিলে পরিষদ সংশ্লিষ্টপ্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন করিবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, কোন সরকারিসম্পত্তিতে সরকারের পূবার্নুমোদন ব্যতীত এই ধরনের প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট চালু করিবার আবেদন করিলে উহা নিবন্ধন করা যাইবেনাঃ
তবে আরও শর্ত থাকে যে, সরকারি সম্পত্তিতে পূর্ব হইতে চালুকৃতপ্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারি সম্পত্তি ব্যবহার সংক্রান্তঅনুমতি না পাইলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নির্দিষ্ট সময়ের পর বাতিল বলিয়াগণ্য হইবে।
(৩) উপ-ধারা () () এর অধীন নিবন্ধিত প্রতিটিপ্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন ৫ (পাঁচ) বৎসর অন্তর অন্তর সরকার কতৃর্ক নির্ধারিত ফিদিয়া নবায়ন করিতে হইবে।

 

নিবন্ধিকরণে ব্যর্থতার দণ্ড

 

৮৪।কোন ব্যক্তি পরিষদের নিবন্ধন ব্যতীত কোন টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল বা প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট স্থাপন বা পরিচালনাকরিলে অথবা উক্তরূপ প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিল করিবার পরও উহাপরিচালনা অব্যাহত রাখিলে ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেএবং উক্তরূপ অর্থদণ্ড আরোপের তারিখের পরেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বাহাসপাতাল পরিচালনা বন্ধ না করিলে প্রতিদিনের জন্য পাঁচশত টাকা হারেঅতিরিক্ত জরিমানা দিতে হইবে।

 

পরিষদ কতৃর্ক ফি আদায়

 

৮৫।পরিষদ উহার এখতিয়ারাধীন এলাকায় নিবন্ধিত টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট ইত্যাদির নিকট হইতে সরকারকতৃর্ক নির্ধারিত হারে বাৎসরিক ফি আদায় করিতে পারিবে।

 

পুনঃনিবন্ধিকরণ

 

৮৬। (১) কোন টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট ইত্যাদির নিবন্ধন ধারা ৮২ এবং ৮৩ এর শর্তাংশেবর্ণিত অনিয়ম ব্যতীত, নিজস্ব ব্যত্যয়ের কারণে বাতিল হইয়া ধারা ৮৪ অনুযায়ীদন্ড প্রাপ্ত হইলে জরিমানা প্রদানের ছয় মাসের মধ্যে দ্বিগুণ পরিমাণজরিমানাসহ পুনঃনিবন্ধিকরণের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে কারণ উলেস্নখ পূর্বকআবেদন করিতে পারিবে।
(২) উপ-ধারা () এর অধীন দাখিলকৃত আবেদনতদনত্দপূর্বক সন্তষজনক বিবেচিত হইলে পরিষদ সংশিস্নষ্ট প্রতিষ্ঠানকেপুনঃনিবন্ধন করিতে পারিবেঃ
তবে শর্ত থাকে যে, কোন প্রতিষ্ঠান এই ধারার অধীনে পুনঃনিবন্ধনের সুযোগ একবারের বেশি গ্রহণ করিতে পারিবে না।

 

 

 

ষোড়শ অধ্যায়
অন্যান্য স্থানীয় কতৃর্পক্ষ, অপরাধ, দণ্ড ইত্যাদি

 

 

 

যৌথ কমিটি

 

৮৭।কোন অভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কোন ইউনিয়ন পরিষদ অন্য যে কোন ইউনিয়নপরিষদ অথবা পরিষদসমূহের সাথে বা কোন পৌরসভা অথবা পৌরসভাসমূহের সাথে অথবাকোন স্থানীয় কতৃর্পক্ষ অথবা কতৃর্পক্ষসমূহের সাথে যৌথ স্বার্থ সংশ্লিষ্টবিষয়ে যৌথ কমিটি গঠন করিতে পারিবে এবং কমিটির কায পরিচালনার জন্য প্রবিধিপ্রণয়নের ক্ষমতাসহ যে কোন ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা অর্পণ করিতে পারিবে।

 

পরিষদ ও পৌরসভার মধ্যে বিরোধ

 

৮৮।যদি দুই বা ততোধিক পরিষদ অথবা কোন পরিষদ এবং পৌরসভার মধ্যে অথবা কোনপরিষদ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়, তাহা হইলে বিষয়টিমীমাংসার জন্য-
(ক) সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ একই জেলার হইলে, ডেপুটি কমিশনারের নিকট পাঠাইতে হইবে;
(খ) সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ একই বিভাগে হইলে, বিভাগীয় কমিশনারের নিকট পাঠাইতে হইবে; এবং
(গ)সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের হইলে অথবা একটি পক্ষক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হইলে সরকারের নিকট পাঠাইতে হইবে; এবং ক্ষেত্রমত, বিভাগীয় কমিশনার অথবা সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।

 

অপরাধ ও দণ্ড

 

৮৯। (১) পঞ্চম তফসিলে বর্ণিত অপরাধসমূহ এই আইনের অধীনে দন্ডনীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে।
(২)এই আইনের অধীনে কোন অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১৫,০০০ (পনের হাজার) টাকাপর্যন্ত অর্থদন্ড প্রদান করা যাইবে এবং উক্ত অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটিলেপ্রমবার অপরাধ সংঘটনের পর উক্ত অপরাধের সাথে পুনরায় জড়িত থাকিবার সময়কালেপ্রতিদিনের জন্য সর্বোচ্চ ২০০ (দুইশত) টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড প্রদান করাযাইবে।

 

অপরাধের আপোষ রফা

 

৯০।চেয়ারম্যান অথবা নির্ধারিত কতৃর্পক্ষ কতৃর্ক সাধারণভাবে অথবা বিশেষভাবেক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি বা কর্মকর্তা এই আইনের অধীনে কোন অপরাধের আপোষমীমাংসা করিতে পারিবেন।

 

অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ

 

৯১।পরিষদ কর্তৃক ৰমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির নিকট হইতে লিখিত কোন অভিযোগ ব্যতীতকোন আদালত, এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ করিতে পারিবে না।

 

পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য

 

৯২। প্রত্যেক পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্ব ও কর্তব্য হইবে -
(ক)এই আইনে বর্ণিত কোন অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা বা অপরাধ সংঘটনের খবর সম্পর্কেঅনতিবিলম্বে পরিষদের চেয়ারম্যান বা সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তাকে অবহিতকরা;
(খ) পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তার লিখিত অনুরোধের ভিত্তিতে আইনসঙ্গত দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা।

 

 

 

সপ্তদশ অধ্যায়
বিবিধ

 

 

 

অবৈধ দখল

 

৯৩। (১) কোন ব্যক্তি কোন পরিষদের জায়গা, সড়ক অথবা নর্দমার বা তার অংশ বিশেষ স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে অবৈধ দখল করিতে পারিবে না।
(২)পরিষদ নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে, অবৈধ দখলকারী ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সময়েরমধ্যে অবৈধভাবে দখলকৃত স্থানসমূহ হইতে তাহার সম্পদ বা সম্পত্তি অপসারণকরিবার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাহা অপসারণ করা নাহইলে পরিষদ স্বীয় উদ্যোগে তাহা অপসারণের ব্যবস্থা করিবে এবং এই বাবদ খরচেরঅর্থ এই আইন মোতাবেক অবৈধ দখলের জন্য দায়ী ব্যক্তির উপর পরিষদের পাওনাহিসাবে ধায হইবে।
(৩) অন্য কোন আইনে যাহাই থাকুক না কেন, এই ধারাঅনুসারে অপসারিত অথবা অপসারণযোগ্য মালামালের জন্য অবৈধ দখলদারকে কোন প্রকারক্ষতিপূরণ দেওয়া হইবে না।

 

আপীল আদেশ

 

৯৪।এই আইন, বিধি বা প্রবিধান অনুসারে পরিষদ কতৃর্ক প্রদত্ত কোন আদেশের ফলেকোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হইলে তিনি বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, নির্ধারিত কতৃর্পক্ষের নিকট আপিল করিতে পারিবেন; এবং এই আপিলের উপরনির্ধারিত কতৃর্পক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে এবং ইহার বিরুদ্ধে কোনআদালতে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

 

স্থায়ী আদেশ

 

৯৫। সরকার, সময়ে সময়ে, স্থায়ী আদেশ দ্বারা-
(ক) স্থানীয় পরিষদ ও স্থানীয় কতৃর্পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে;
(খ) স্থানীয় পরিষদ ও সরকারি দপ্তরসমূহের কাযাবর্লীর সমন্বয় সাধন করিতে পারিবে;
(গ) স্থানীয় পরিষদকে আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ বিশেষ শর্তে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে মঞ্জুরী প্রদান করিতে পারিবে; (ঘ) কোন স্থানীয় পরিষদ কতৃর্ক অন্য স্থানীয় পরিষদকে চাঁদা প্রদানের ব্যবস্থা করিতে পারিবে; এবং
(ঙ) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে স্থানীয় পরিষদকে সাধারণ নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।

 

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

 

৯৬। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার নিম্নবর্ণিত সকল অথবা যে কোন বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথাঃ-
(ক) চেয়ারম্যান ও সদস্যগণের ক্ষমতা ও কাযাবর্লী;
(খ) সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের ক্ষমতা ও বিশেষ কাযাবর্লী;
(গ) পরিষদের পক্ষে চুক্তি সম্পাদন;
(ঘ) পরিষদ কতৃর্ক যে সকল রেকর্ড, রিপোর্ট রক্ষণাবেক্ষণ, প্রস্তুত বা প্রকাশ করা হইবে তাহা নির্ধারণ;
(ঙ) পরিষদের কর্মকর্তা ও কমর্চারীগণের নিয়োগ ও চাকুরির শর্তাবলী;
(চ) তহবিল ও বিশেষ তহবিলসমূহের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধান ও বিনিয়োগ;
(ছ) বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন এবং এতদ্সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়;
(জ) হিসাব রক্ষণ এবং নিরীক্ষণ;
(ঝ) পরিষদের সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও হস্তান্তর;
(ঞ) উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন, নিয়ন্ত্রণ, সমন্বিতকরণ, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন;
(ট)পরিষদের অর্থের বা সম্পত্তির ক্ষতিসাধন বা বিনষ্টিকরণ বা ক্ষমতারঅপপ্রয়োগের জন্য পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং অন্য কোন ব্যক্তিরদায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করিবার পদ্ধতি;
(ঠ) কর, রেইট, টোল এবং ফিস ধায, আদায় ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়;
(ড) পরিষদের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের কতৃর্পক্ষ নির্ধারণ পদ্ধতি;
(ঢ) পরিষদ পরিদর্শনের পদ্ধতি এবং পরিদর্শকের ক্ষমতা।

 

প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা

 

৯৭।এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিষদ, সরকারের পূবার্নুমোদনক্রমে, এই আইন বাকোন বিধির সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবেএবং উক্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া অনুরূপ প্রবিধানে নিম্নরূপবিষয়ে বিধান করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) পরিষদের কাযাবর্লী পরিচালনা;
(খ) সভা আহবান;
(গ) সভার কোরাম নির্ধারণ;
(ঘ) সভার কাযবিবরণী লিখন;
(ঙ) সভায় গৃহীত প্রস্তাব বাস্তবায়ন;
(চ) স্থায়ী কমিটির বিষয়াদি ও কাযাবর্লী পরিচালনা;
(ছ) সাধারণ সীলমোহর হেফাজত ও ব্যবহার;
(জ) কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে পরিষদের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা অর্পণ;
(ঝ) পরিষদের অফিসের বিভাগ ও শাখা গঠন এবং সব কাজের পরিধি নির্ধারণ;
(ঞ) গবাদি পশু ও অন্যান্য প্রাণীর বিক্রয় রেজিষ্ট্রিকরণ;
(ট) সাধারণের ব্যবহায সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ;
(ঠ) শ্মশান ও কবরস্থান নিয়ন্ত্রণ;
(ড) সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ;
(ঢ) অবৈধ দখল রোধকরণ;
(ণ) গবাদি পশুর খোয়াড় ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ;
(ত) শিক্ষা সফর, পযবেক্ষণ ইত্যাদি উপলক্ষে সরকারি বা বেসরকারিভাবে বিদেশ ভ্রমণ;
(থ) এই আইনের অধীন প্রবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রণযোগ্য অন্য যে কোন বিষয়।

 

বিধি ও প্রবিধান সংক্রান্ত সাধারণ বিধান, ইত্যাদি

 

৯৮। (১) পরিষদ সম্পকির্ত বিধি ও প্রবিধানের কপি পরিষদ অফিসে পরিদর্শন ও বিক্রয়ের জন্য রাখিতে হইবে।
(২)সরকার নমুনা প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং এইরূপ কোন নমুনা প্রবিধানপ্রণীত হইলে পরিষদ প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে উক্ত নমুনা অনুসরণ করিবে।

 

নির্ধারিত কতিপয় বিষয়

 

৯৯।এই আইনের অধীন কোন কাজ করিবার জন্য নির্ধারিত থাকা সত্ত্বেও যদি কোন্কতৃর্পক্ষ কতৃর্ক বা কোন্ পদ্ধতিতে তাহা করা হইবে তৎসম্পর্কে কোন বিধান নাথাকে তাহা হইলে উক্ত কাজ সরকার কতৃর্ক নির্দেশিত কতৃর্পক্ষ নির্ধারিতপদ্ধতিতে সম্পন্ন করিবে।

 

প্রথম নিবার্চনের জন্য পরিষদ এবং ওয়ার্ড

 

১০০।এই আইনের অধীন পরিষদের প্রথম নিবার্চনের উদ্দেশ্যে এই আইন জারি হইবারপূর্ব পযর্ন্ত যে সকল পরিষদের অস্তিত্ব ছিল, সরকার ভিন্নরূপ কোন আদেশ নাদিলে, এই আইনের অধীন ঘোষিত ইউনিয়ন বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত স্থানীয় সরকারপ্রতিষ্ঠানের সকল ওয়ার্ডে ধারা ১৩ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারিত হইয়াছে বলিয়াগণ্য হইবে।

 

অসুবিধা দূরীকরণ

 

১০১।এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, উক্ত অসুবিধা দূরীকরণার্থ, আদেশ দ্বারা, প্রয়োজনীয় যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণকরিতে পারিবে।

 

ক্ষমতা অর্পণ

 

১০২। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা বিধিসমূহে বর্ণিত, যে কোন ক্ষমতা বিভাগীয় কমিশনার বা তাহার অধীনস্থ কোন কর্মকর্তাকে অর্পণকরিতে পারিবে।
(২) বিভাগীয় কমিশনার, সরকারের পূবার্নুমোদনক্রমে, তাহার উপর অর্পিত যেকোন ক্ষমতা তাহার অধীনস্থ অন্য কোন কর্মকর্তাকে অর্পণকরিতে পারিবে।

 

লাইসেন্স ও অনুমোদন

 

১০৩। (১) এই আইন অথবা বিধি অথবা প্রবিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন কাজসম্পাদন করিবার জন্য পরিষদের অনুমতি বা অনুমোদনের প্রয়োজন হইলে, উক্তঅনুমতি বা অনুমোদন লিখিত আকারে প্রদান করিতে হইবে।
(২) পরিষদ কতৃর্কঅথবা পরিষদের কতৃর্ত্বের অধীন প্রদত্ত সকল লাইসেন্স অনুমোদন বা অনুমতিচেয়ারম্যান কতৃর্ক অথবা চেয়ারম্যানের অনুমোদনক্রমে বিধি ও প্রবিধান দ্বারাপরিষদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কতৃর্ক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে।

 

পরিষদের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা দায়ের

 

১০৪।সরকারিভাবে দায়িত্ব পালনকালে কোন পরিষদ কিংবা কোন সদস্য, কর্মকর্তা বাকর্মচারী দ্বারা কৃত কোন কাজ, বা কাজ করা হইয়াছে বলিয়া মনে হইলে, সেসম্পর্কে লিখিতভাবে নোটিশ প্রদানের পর একমাস অতিবাহিত না হইলে তাহারবিরুদ্ধে কোন মোকদ্দমা দায়ের করা যাইবে না এবং এই ক্ষেত্রে পরিষদের নিকটলিখিত নোটিশ অফিসে বিলি করিতে বা পৌছাইতে হইবে এবং কোন সদস্য, কর্মকর্তাবা কর্মচারীর ক্ষেত্রে লিখিত নোটিশ তাহার নিকট পৌছাইতে হইবে কিংবা তাহারঅফিসে বা আবাসিক ঠিকানায় পৌছাইতে হইবে এবং নোটিশে ফরিয়াদী হইতে ইচ্ছুকব্যক্তি তাহার এইরূপ পদক্ষেপের কারণ, নিজ নাম ও আবাসিক ঠিকানা উল্লেখকরিবেন; এবং মোকদ্দমা আর্জিতে এই মর্মে একটি বিবৃতি অন্তভুর্ক্ত থাকিতেহইবে যে, উপরোক্ত ব্যবস্থা অনুযায়ী নোটিশ পাঠানো হইয়াছে।

 

নোটিশ ও উহা জারিকরণ

 

১০৫।এই আইন বা বিধি বা প্রবিধানের অধীন কোন ব্যক্তি কতৃর্ক কোন কিছু করিবারঅথবা না করিবার প্রয়োজন হইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাহা প্রতিপালনের সময়নির্দেশপূবর্ক নোটিশ জারি করিতে হইবে।

 

প্রকাশ্য রেকর্ড

 

১০৬।এই আইনের অধীন প্রস্তুতকৃত এবং সংরক্ষিত যাবতীয় রেকর্ড এবং রেজিস্ট্রার, সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ (Evidence Act, 1872) এ যে অর্থে ব্যবহত হইয়াছে, সেইঅর্থে প্রকাশ্য রেকর্ড (Public document) বলিয়া গণ্য হইবে এবং বিপরীতপ্রমাণিত না হইলে তাহা বিশুদ্ধ বলিয়া গণ্য হইবে।

 

পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, ইত্যাদি জনসেবক (Public Servant) হইবেন

 

১০৭।পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী এবং পরিষদের পক্ষে কাজকরিবার জন্য যথাযথ ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্যান্য ব্যক্তি দণ্ড বিধি, ১৮৬০ (Penal Code, 1860) এর ধারা ২১ এ যে অর্থে জনসেবক অভিব্যক্তিটি ব্যবহৃত হইয়াছেসেই অর্থে জনসেবক (Public Servant) বলিয়া গণ্য হইবে।

 

রহিতকরণ এবং হেফাজত

 

১০৮। (১) এই আইন বলবৎহইবার সঙ্গে সঙ্গে The Local Government (Union Parishads) Ordinance, 1983 (Ord. No. LI of 1983), অতঃপর বিলুপ্ত অধ্যাদেশবলিয়া উল্লিখিত, রহিত হইবে।
(২) উপ-ধারা () এর অধীন বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পর

(ক)এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীনে পরিষদ গঠিত না হওয়াপর্যন্ত বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল পরিষদবিদ্যমান ছিল তাহা এই আইনের অধীন গঠিত পরিষদ বলিয়া গণ্য হইবে এবং তদনুসারেউহার কার্যাবলী পরিচালনা করিবে;
(খ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশের অধীন প্রণীতসকল বিধি, প্রবিধান ও আদেশ, জারিকৃত বিজ্ঞপ্তি বা নোটিশ বা মঞ্জুরীকৃত সকললাইসেন্স ও অনুমতি এই অধ্যাদেশের বিধানাবলীর সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়াসাপেক্ষে, রহিত ও সংশোধিত না হওয়া পযর্ন্ত বলবৎথাকিবে এবং এই অধ্যাদেশেরঅধীন প্রণীত, প্রদত্ত, জারিকৃত বা মঞ্জুরীকৃত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
(গ)পূবর্তন পরিষদের সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কতৃর্ত্ব ও সুবিধা, সকলস্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, বিনিয়োগ এবং উক্তসম্পত্তি সম্পর্কিত উহার যাবতীয় অধিকার বা উহাতে যাবতীয় স্বার্থ উহারউত্তরাধিকারী পরিষদের নিকট হস্তান্তরিত ও ন্যস্ত হইবে;
(ঘ) বিলুপ্তঅধ্যাদেশ রহিত হইবার পূবে পূবর্তন পরিষদের যে সকল ঋণ, দায় ও দায়িত্ব ছিলএবং উহার দ্বারা বা উহার সহিত যে সকল চুক্তি সম্পাদিত হইয়াছিল তাহা উহারউত্তরাধিকারী পরিষদের ঋণ, দায় ও দায়িত্ব এবং উহার দ্বারা বা উহার সহিতসম্পাদিত চুক্তি বলিয়া গণ্য হইবে;
(ঙ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবারপূর্বে পূবর্তন পরিষদ কতৃর্ক প্রণীত সকল বাজেট, প্রকল্প ও পরিকল্পনা বাতৎকতৃর্ক কৃত মূল্যায়ন ও নির্ধারিত কর, এই অধ্যাদেশের বিধানাবলীর সহিতসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পযর্ন্ত, এইঅধ্যাদেশের অধীন উত্তরাধিকারী পরিষদ কতৃর্ক প্রণীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;
(চ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পূর্বে পরিষদের প্রাপ্য সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য অর্থ এই অধ্যাদেশের অধীন উত্তরাধিকারী পরিষদেরপ্রাপ্য বলিয়া গণ্য হইবে;
(ছ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পূর্বেপূবর্তন পরিষদ কতৃর্ক আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য দাবিইহার উত্তরাধিকারী পরিষদ কতৃর্ক পরিবর্তিত না হওয়া পযর্ন্ত একই হারেঅব্যাহত থাকিবে;
(জ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশ রহিত হইবার পূর্বে পূবর্তনপরিষদের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী উত্তরাধিকারী পরিষদে বদলী হইবেন ও ইহারকর্মকর্তা ও কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন এবং তাঁহারা উক্তরূপ বদলীর পূবে যেশর্তে চাকুরিরত ছিলেন, উত্তরাধিকারী পরিষদ কতৃর্ক পরিবর্তিত না হইলে সেইশর্তেই তাঁহারা ইহার অধীন চাকুরিরত থাকিবেন;
(ঝ) বিলুপ্ত অধ্যাদেশরহিত হইবার পূবে পূবর্তন পরিষদ কতৃর্ক বা ইহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত যে সবমামলা মোকদ্দমা চালু ছিল সেই সব মামলা মোকদ্দমা ইহার উত্তরাধিকারী পরিষদকতৃর্ক বা ইহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বলিয়া গণ্য হইবে।

 

      

 

 

জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন

                    অধ্যায়-১প্রারম্ভিক         [৭ ডিসেম্বর, ২০০৪]

 

সংক্ষিপ্ত শিরোনামা ও প্রবর্তন

১৷ (১) এই আইন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ নামে অভিহিত হইবে৷

(২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেই তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে৷

 

সংজ্ঞা

২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী না হইলে, এই আইনে,-

(ক) “অভিভাবক” অর্থ The Guardians and Wards Act, 1890 (Act VIII of 1890) এ সংজ্ঞায়িত অভিভাবক;

(খ) “ইউনিয়ন পরিষদ” অর্থ The Local Government (Union Parishads) Ordinance, 1983 (Ordinance No. LI of 1983) এর অধীন সংজ্ঞায়িত ইউনিয়ন পরিষদ;

(গ) “ওয়ার্ড” অর্থ সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের কোন ওয়ার্ড;

(ঘ) “কমিশনার” অর্থ সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার কোন কমিশনার;

(ঙ) “ক্যান্টনমেন্ট” অর্থ Cantonments Act, 1924 (Act II of 1924) এর অধীন গঠিত কোন ক্যান্টনমেন্ট;

(চ) “জন্ম বা মৃত্যু সনদ” অর্থ এই আইনের অধীন জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন বহিতে লিপিবদ্ধ তথ্যের নিবন্ধক কর্তৃক প্রত্যায়িত অনুলিপি;

(ছ) “জন্ম” অর্থ কোন ব্যক্তির জীবিত ভূমিষ্ট হওয়া;

(জ) “নির্ধারিত” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত;

(ঝ) “নিবন্ধক” অর্থ ধারা ৪ এর অধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি;

(ঞ) “নিবন্ধন” অর্থ নিবন্ধন বহিতে কোন ব্যক্তির জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করা;

(ট) “নিবন্ধন বহি” অর্থ কোন ব্যক্তির জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন বহি;

(ঠ) “পৌরসভা” অর্থ Paurashava Ordinance, 1977 (Ord. No. XXVI of 1977) এর অধীন গঠিত কোন পৌরসভা;

(ড) “প্রশাসক” অর্থ Paurashava Ordinance, 1977 (Ord. No. XXVI of 1977) এর অধীন কোন প্রশাসক;

(ঢ) “ব্যক্তি” অর্থ কোন বাংলাদেশী বা বাংলাদেশে বসবাসকারী কোন বিদেশী এবং বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী কোন শরণার্থী;

(ণ) “মৃত্যু” অর্থ কোন ব্যক্তির জীবনাবসান হওয়া;

(ত) “সদস্য” অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের কোন সদস্য;

(থ) “সরকার” অর্থ স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; এবং

(দ) “সিটি কর্পোরেশন” অর্থ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেটসিটি কর্পোরেশন এবং কোন আইনের অধীন সময়ে সময়ে গঠিত অন্য কোন সিটিকর্পোরেশন৷

 

আইনের প্রাধান্য

৩৷অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন কার্যকর হইবার পর এই আইনেরবিধান মোতাবেক কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন করিতে হইবে৷

 

 

নিবন্ধক

অধ্যায়-২
নিবন্ধক ও নিবন্ধন

৪৷ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য নিম্ন বর্ণিত ব্যক্তিগণ নিবন্ধক হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন, যথা:-

(ক)সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জন্ম গ্রহণকারী, মৃত্যুবরণকারী অথবা স্থায়ীভাবেবসবাসকারী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বাতত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা কমিশনার;

(খ) পৌরসভাএলাকায় জন্ম গ্রহণকারী, মৃত্যুবরণকারী অথবা স্থায়ীভাবে বসবাসকারীব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পৌরসভার চেয়ারম্যান বা প্রশাসক বা তত্কর্তৃকক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোন কর্মকর্তা বা কমিশনার;

(গ) ইউনিয়ন পরিষদএলাকায় জন্ম গ্রহণকারী, মৃত্যুবরণকারী অথবা স্থায়ীভাবে বসবাসকারীব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সরকার কর্তৃকক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা সদস্য;

(ঘ) ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়জন্ম গ্রহণকারী, মৃত্যুবরণকারী অথবা স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিদেরক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট বা তত্কর্তৃকক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা;

(ঙ) বিদেশে জন্ম গ্রহণকারী ওমৃত্যুবরণকারী কোন বাংলাদেশীর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত বাতত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা৷

 

নিবন্ধন

৫৷ (১) জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, লিঙ্গ নির্বিশেষে নিবন্ধক সকল ব্যক্তির জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বহিতে নিবন্ধন করিবে৷

(২) নির্দিষ্ট সময় ও নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধকের নিকট তথ্য প্রেরণ করিতে হইবে৷

(৩)জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য এই ধারার অধীন তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রদানকারীর এই মর্মে একটি ঘোষণা থাকিবে যে, উক্ত তথ্য সঠিক এবং উক্ত জন্মবা মৃত্যু ইতিপূর্বে নিবন্ধিত হয় নাই৷

 

নিবন্ধকের দায়িত্ব

৬৷ নিবন্ধকের নিম্নবর্ণিত দায়িত্ব থাকিবে, যথা:-

(ক) সকল ব্যক্তির জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করা;

(খ) নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ, এবং ফরম, রেজিস্টার ও সনদ ছাপানো অথবা সংগ্রহ;

(গ) নিবন্ধন সংক্রান্ত নথিপত্র বা নিবন্ধন বহি সংরক্ষণ করা;

(ঘ) জন্ম ও মৃত্যু সনদ সরবরাহ করা; এবং

(ঙ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন দায়িত্ব৷

 

নিবন্ধকের ক্ষমতা

৭৷ (১) কোন ব্যক্তির নিবন্ধন করার জন্য তথ্যের সত্যতা যাচাই এর প্রয়োজনেনিবন্ধক নিজে অথবা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির দ্বারা তদন্ত করিতেপারিবেন৷

(২) নির্দিষ্ট সময়ের কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধনকরা না হইলে নিবন্ধক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পিতা মাতা বা পুত্র বা কন্যা বাঅভিভাবক অথবা নির্ধারিত কোন ব্যক্তিকে জন্ম ও মৃত্যুর তথ্য প্রদানেরনির্দেশ সম্বলিত নোটিশ জারী করিতে পারিবেন৷

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীনতদন্তের স্বার্থে নিবন্ধক বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিবন্ধন বহিতলব করিতে এবং প্রয়োজনে কোন ব্যক্তিকে সাক্ষ্য প্রদানের নোটিশ দিতেপারিবেন৷

 

জন্ম ও মৃত্যু তথ্য প্রদানের জন্য দায়ী ব্যক্তি

৮৷ (১) শিশুর পিতা বা মাতা বা অভিভাবক বা নির্ধারিত ব্যক্তি উক্ত শিশুরজন্মের ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) দিনের মধ্যে জন্ম সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধকের নিকটপ্রদানের জন্য বাধ্য থাকিবেন৷

(২) মৃত ব্যক্তির পুত্র বা কন্যা বাঅভিভাবক বা নির্ধারিত ব্যক্তি মৃত্যুর ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে মৃত্যুসংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধকের নিকট প্রদানের জন্য বাধ্য থাকিবেন৷

 

কতিপয় কর্মকর্তা বা কর্মচারীর দায়িত্ব

৯৷ (১) নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণ কোন ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধকের নিকট তথ্য প্রেরণ করিতে পারিবেন, যথা:-
(ক) ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, এবং সচিব;
(খ) গ্রাম পুলিশ;
(গ) সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার কমিশনার;
(ঘ) ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন অথবা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী ও পরিবার কল্যাণ কর্মী;
(ঙ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সেক্টরে নিয়োজিত বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) মাঠকর্মী;
(চ)কোন সরকারী বা বেসরকারী হাসপাতাল বা ক্লিনিক বা মাতৃসদন বা অন্য কোনপ্রতিষ্ঠানে জন্মগ্রহণ ও মৃত্যুবরণের ক্ষেত্রে উহার দায়িত্বপ্রাপ্তমেডিক্যাল অফিসার অথবা ডাক্তার বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা;
(ছ) কোন গোরস্থান বা শ্মশান ঘাটের তত্ত্বাবধায়ক;
(জ) নিবন্ধক কর্তৃক নিয়োজিত অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী;
(ঝ) জেলখানায় জন্ম ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে জেল সুপার বা জেলার বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি;
(ঞ)পরিত্যক্ত শিশু বা সাধারণ স্থানে (Public Place) পড়িয়া থাকা পরিচয়হীন মৃতব্যক্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা; এবং

(ট) নির্ধারিত অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান৷
(২)কোন ব্যক্তির জন্ম ও মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিতব্যক্তির নিকট সরবরাহ করিলে তিনি নিজে উহা নিবন্ধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করিবেন অথবা তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে নিবন্ধনের পরামর্শসহপ্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করিবেন৷

 

শিশুর নাম নির্ধারণ

১০৷ জন্ম নিবন্ধনের পূর্বে শিশুর নাম নির্ধারণ করিতে হইবে:

তবেশর্ত থাকে যে, কোন শিশুর নাম নির্ধারণ করা না হইলে উক্ত শিশুর জন্মনিবন্ধন করা যাইবে এবং সেইক্ষেত্রে নিবন্ধনের পরবর্তী ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ)দিনের মধ্যে তাহার নাম সরবরাহ করিতে হইবে৷

 

জন্ম ও মৃত্যু সনদ প্রদান

১১৷ কোন ব্যক্তির আবেদনক্রমে নিবন্ধক নির্ধারিত ফি ও পদ্ধতিতে নিবন্ধিত ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু সনদ প্রদান করিবেন৷

 

নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান

১২৷ (১) কোন ব্যক্তি নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে নিবন্ধন বহির যে কোন তথ্যেরবা উদ্ধৃতাংশের জন্য নিবন্ধকের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত উদ্ধৃতাংশে মৃত্যুর কারণ অন্তর্ভুক্ত করা যাইবে না৷
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত সকল তথ্য ও উদ্ধৃতাংশ নিবন্ধক কর্তৃক প্রত্যায়িত হইতে হইবে এবং উহা সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হইবে৷

 

বিলম্বিত নিবন্ধন

১৩৷ধারা ৮ এ উল্লিখিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জন্ম বা মৃত্যুর তথ্য নিবন্ধকেরনিকট প্রেরণ করা না হইলে পরবর্তী সময় উহা নির্ধারিত সময়, পদ্ধতি ও ফিপ্রদান সাপেক্ষে নিবন্ধন করা যাইবে:

তবে শর্ত থাকে এই আইন কার্যকরহইবার পূর্বে জীবিত ও মৃত ব্যক্তির নিবন্ধনের ক্ষেত্রে এই আইন কার্যকরহইবার ২ (দুই) বত্সরের মধ্যে ফি এর প্রয়োজন হইবে না৷

 

 

অধ্যায়-৩
নিবন্ধন বহি সংরক্ষণ, সংশোধন ও পরিদশর্ন

 

 

 

 

রেকর্ড সংরক্ষণ

১৪৷ (১) নিবন্ধক নির্ধারিত পদ্ধতি ও ফরমে নিবন্ধন বহি সংরক্ষণ করিবেন এবং নিবন্ধন বহি স্থায়ী রেকর্ড হিসাবে গণ্য হইবে৷

(২) নিবন্ধন বহি হারাইয়া গেলে বা বিনষ্ট হইলে নিবন্ধক উহার জন্য দায়ী থাকিবেন৷

(৩) নিবন্ধন বহি ছাড়া জন্ম বা মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যাইবে৷

 

নিবন্ধন বহি সংশোধন

১৫৷ (১) নিবন্ধন বহিতে কোন ভুল তথ্য লিপিবদ্ধ হইয়া থাকিলে, উহা সংশোধনের জন্য নির্ধারিত ফিসহ আবেদন করা যাইবে৷

(২)উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদন যথাযথ মনে করিলে নিবন্ধক নিবন্ধন বহি সংশোধনকরিবেন এবং সংশোধিত স্থানে তারিখসহ স্বাক্ষর প্রদান করিবেন৷

 

তত্ত্বাবধান ও পরিদর্শন

১৬৷সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি নিবন্ধকের কার্যালয়, নিবন্ধন বহি ও নিবন্ধন সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম তত্ত্বাবধান ও পরিদর্শনকরিতে পারিবেন৷

 

প্রতিবেদন

১৭৷সরকার প্রয়োজনে, নিবন্ধকের নিকট হইতে যে কোন সময় নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্যবা উহার প্রতিবেদন তলব করিতে পারিবে এবং নিবন্ধক উহা সরকারের নিকট সরবরাহকরিতে বাধ্য থাকিবেন৷

 

 

অধ্যায়-৪
বিবিধ

 

 

 

 

জন্ম বা মৃত্যু সনদের সাক্ষ্য মূল্য

১৮৷ (১) কোন ব্যক্তির বয়স, জন্ম ও মৃত্যু বৃত্তান্ত প্রমাণের ক্ষেত্রে কোনঅফিস বা আদালতে বা স্কুল-কলেজে বা সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে এই আইনেরঅধীন প্রদত্ত জন্ম বা মৃত্যু সনদ সাক্ষ্য হিসাবে বিবেচ্য হইবে৷

(২)নিবন্ধন সংক্রান্ত সকল নথিপত্র ও নিবন্ধন বহি The Evidence Act, 1872 (Act I of 1872) এর Public Document (সাধারণ দলিল) যেই অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেইঅর্থে Public Document (সাধারণ দলিল) বলিয়া গণ্য হইবে৷

(৩) অন্য কোনআইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির ক্ষেত্রে বয়সপ্রমাণের জন্য এই আইনের অধীন প্রদত্ত জন্ম সনদ ব্যবহার করিতে হইবে, যথা:-

(ক) পাসপোর্ট ইস্যু;
(খ) বিবাহ নিবন্ধন;

(গ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি;
(ঘ) সরকারী, বেসরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দান;
(ঙ) ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু;
(চ) ভোটার তালিকা প্রণয়ন;
(ছ) জমি রেজিস্ট্রেশন; এবং
(জ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন ক্ষেত্রে৷

[ (৪) উপ-ধারা (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, সরকারী গেজেটেপ্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তি শ্রেণী কিংবা কোন দপ্তর বাপ্রতিষ্ঠান বা বিশেষ শ্রেণীর দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানকে উপ-ধারা (৩) এর বিধানেরপ্রয়োগ হইতে তত্কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের জন্য অব্যাহতি দিতে পারিবে৷]

(৫)এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে অন্য কোন আইনের অধীন কোন জন্ম ওমৃত্যুর সনদ উপ-ধারা (৩) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ব্যবহার করা যাইবে৷

 

জনসেবক

১৯৷নিবন্ধক, the Penal Code (Act XLV of 1860) এর section 21 এ public servant (জনসেবক) অভিব্যক্তিটি যেই অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে public servant (জনসেবক) বলিয়া গণ্য হইবে৷

 

আপীল

২০৷নিবন্ধকের কোন আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদেশের ৩০ (ত্রিশ) দিনেরমধ্যে নিম্নবর্ণিত কর্তৃপক্ষের নিকট আপীল করিতে পারিবেন, যথা:-

(ক) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির আদেশের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার;

(খ) পৌরসভার চেয়ারম্যান বা প্রশাসক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা কমিশনারের আদেশের বিরুদ্ধে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট;

(গ) ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট অথবা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট;

(ঘ) সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অথবা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কমিশনারের আদেশের বিরুদ্ধে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট; এবং

(ঙ) রাষ্ট্রদূত বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ৷

 

দণ্ড

২১৷এই আইনের বিধান বা তদধীন প্রণীত বিধি লংঘনকারী নিবন্ধক বা কোন ব্যক্তিঅনধিক ৫০০.০০ (পাঁচশত) টাকা অর্থদণ্ডে অথবা অনধিক দুই মাস বিনাশ্রমকারাদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

 

মামলা দায়ের

২২৷ এই আইনের অধীন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অথবা নিবন্ধক ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন৷

 

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

২৩৷ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে৷

 

রহিতকরণ ও হেফাজত

২৪৷ (১) The Births and Deaths Registration Act, 1873 (Bengal Act IV of 1873) এতদ্বারা রহিত করা হইল৷

(২) The Births, Deaths and Marriages Registration Act, 1886 (Bengal Act VI of 1886) এর জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধানাবলীএতদ্বারা রহিত করা হইল৷

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন রহিতকরণসত্ত্বেও, রহিত Act ও বিধানাবলীর অধীন কৃত সকল কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থাএই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে৷

 

 

 

 

 

 

         
 

 

 

     
 

 

বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন:

01.  http//: br.lgd.gov.bd

02.  www.lgd.gov.bd